রঞ্জিত হালদার, জীবনতলা : কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত রোগীকে তাবিজ দিয়ে সুস্থ করে তোলার প্রতিশ্রুতি। অন্ধ বিশ্বাসের জেরে ৭ লক্ষ টাকা খোয়ানোর অভিযোগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার বাসিন্দা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


চেয়েছিলেন স্বামীকে সুস্থ করতে। বদলে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব তো হারালেনই, বাঁচাতে পারলেন না স্বামীকেও। একবিংশ শতাব্দীতেও মধ্যযুগীয় কুসংস্কার।
কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত রোগীকে তাবিজ দিয়ে সুস্থ করে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। 


গত ১৭ মে মৃত্যু হয় বারুইপুরের সূর্যপুরের বাসিন্দা ইউসুফ সর্দারের। মৃতের স্ত্রীর দাবি, চলতি বছরের শুরুতে স্বামীর কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে। বারুইপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়ার সময় একদিন অটোতে পরিচয় হয় নুরুজ্জামান সিরাজ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। 


মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, ইউসুফের অসুস্থতার কথা জানতে পেরে নুরুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ডায়ালিসিসের প্রয়োজন নেই। তিনিই জলপড়া, তাবিজ দিয়ে ইউসুফকে সুস্থ করে তুলবেন। তবে এই তাবিজ দেওয়ার কথা পরিবারের কাউকে জানালে, মৃত্যু হবে ইউসুফের। ক্ষতি হতে পারে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও।


মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, জমি-সোনার গয়না বিক্রি করে, ধার নিয়ে অভিযুক্ত নুরুজ্জামান সিরাজকে ৭ লক্ষ টাকা দিয়ে তাবিজ নেন তিনি। কিন্তু, স্বামীর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। ১৭ মে মৃত্যু হয় স্বামীর। মৃতের স্ত্রীর দাবি, পরে পাওনাদাররা বাড়িতে এসে টাকা চাইলে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান। এরপরই অভিযোগ দায়ের করা হয় বারুইপুর থানায়। অভিযুক্ত নুরুজ্জামান সিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ।


অভিযোগকারী ও মৃতের স্ত্রী নুরনাহার বিবি বলেন, কাউকে জানাতে বারণ করে। সেই ভয়ে কাউকে জানাইনি।


অভিযুক্ত নুরুজ্জামান সিরাজ বলেন, আমি তাবিজ জলপড়া দিয়েছিলাম। হাসপাতালে যেতে বারণ করিনি। টাকা নিয়েছি। 


কুসংস্কারে বিশ্বাস না করে স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো মৃত্যু এড়ানো যেত। এখন একটাই আক্ষেপ স্ত্রী নুরনাহারের।