গৌতম মণ্ডল, ঢোলাহাট (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) : চোর সন্দেহে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে এক যুবককে মারধরের ফলে মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবারের। ২২ বছরের ওই যুবক ঢোলাহাটের ঘাটবকুলতলা গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনায় অভিযোগের তির সুন্দরবন পুলিশ জেলার ঢোলাহাট থানার বিরুদ্ধে। ঘটনায় জেরে এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ঘটনার বিস্তার...
ঘটনার সূত্রপাত গত ৩০ জুন। ওইদিন ওই যুবকের কাকার বাড়ি থেকে সোনার গয়না চুরি হয় ৷ এরপর ১ জুলাই ঢোলাহাট থানার পুলিশ কাকা-ভাইপোকে থানায় তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, কাকাকে দিয়ে ভাইপোর নামে জোর করে চুরির অভিযোগ লিখিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ওই যুবককে থানার মধ্যে দফায় দফায় মারধর করা হয়।
৪ জুলাই কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় ওই যুবককে। ওইদিন তাঁকে জামিন দেয় আদালত। এরপর গুরুতর অসুস্থ ওই যুবককে মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার ও চিত্তরঞ্জন হাসপাতলে ভর্তির চেষ্টা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। গতকাল রাতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। সুন্দরবনের পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানিয়েছেন, আদালতে পেশ করার সময় মেডিক্যালে কোনও সমস্যা ছিল না। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ।
কড়েয়ার যে নার্সিংহোমে ওই যুবকের মৃত্যু হয় সেখান থেকে পুলিশ এসে মৃতদেহ নিয়ে যায়। নার্সিংহোমের এক আধিকারিক বলেন, 'যখন নার্সিংহোমে নিয়ে আসা হয় তখন রোগীর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। ওঁর শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল। অক্সিজেন দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। এরপর রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায়, ওঁর ইউরিয়া-ক্রিয়েটিনিন অনেক বেশি রয়েছে। বাড়ির লোকেরা পুলিশি হেনস্থার কথা বলছিলেন। কিন্তু, এব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভর্তি করা হয়েছিল। রাতে ৯টা ১৫ মিনিট নাগাদ মারা যান। ২ ঘণ্টা ডায়ালিসিস করেও কিছু করা যায়নি। এনআরএসের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে।'
মৃতের এক আত্মীয় বলেন, 'এই ঘটনার জন্য দায়ী ঢোলাহাট থানার পুলিশ। সন্দেহ করে ওঁকে মারা হয়েছিল।' অপর এর আত্মীয় বলেন, 'ওঁর খুব শ্বাসকষ্ট ও বমি হচ্ছিল। তাই এখানে নিয়ে এসেছিলাম।'
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।