পার্থপ্রতিম ঘোষ ও সুকান্ত দাস, দক্ষিণ ২৪ পরগনা:  কুলতলির ডোঙ্গাজোড়া গ্রামে জোড়া খাঁচা পেতে, মাচায় রাতভর পাহারা দেওয়াই সার। পাঁচদিন কেটে গেলেও ধরা পড়েনি রয়্যাল বেঙ্গল। রাতে শেখপাড়ার জঙ্গলে লাগানো জাল ছিঁড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে বাঘ। কাদামাটিতে আঁচড়ানোর দাগও মিলেছে বলে বন দফতরের কর্মীরা জানান। গতকাল গোটা গ্রাম অন্ধকার করে রাখা হয়। বাঘের নড়াচড়া টের পাওয়া গেছে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। আশেপাশের এলাকায় নতুন করে মিলেছে বাঘের পায়ের ছাপ।ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাঘকে কাবু করার জন্য জঙ্গল ঘিরে রেখেছেন বন কর্মীরা।  কিন্তু বাঘের দেখা মেলেনি।  বাঘের আতঙ্কে ঘুম উড়েছে ডোঙ্গাজোড়া গ্রামের বাসিন্দারা।
শনিবারের পর রবিবারও কুলতলিতে ফের শোনা যায় দক্ষিণ রায় বাহনের গর্জন। কিন্তু দর্শন মেলেনি।ডোঙ্গাজোড়া গ্রামের শেখপাড়ার জঙ্গলে পাতা হয় খাঁচা, দেওয়া হয় টোপ। নেমেছে র্যাাফ!তবুও অধরা বাঘ। টানা কয়েকদিন ধরে বন দফতরকে কার্যত নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে রয়্যাল বেঙ্গল। তার মধ্যেই রবিবার নতুন করে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। শোনা যায় গর্জন। 


দক্ষিণ রায়ের বাহনের আতঙ্কে তটস্থ দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বন দফতরের অনুমান, জঙ্গলের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছে বাঘটি।খাবার না মেলায় অভুক্ত থাকায় আরও হিংস্র হয়ে উঠতে পারে সে। 


রবিবার তখন সবে ভোরের আলো ফুটেছে। বাঘের অবস্থান জানতে বন দফতরের আধিকারিকরা স্পিড বোট, লঞ্চ নিয়ে পিয়ালি নদীতে রওনা হন। 


রবিবার ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৮টা। কুলতলির ডোঙ্গাজোড়া গ্রামের শেখপাড়ার জঙ্গলে ফের বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে বলে হইচই পড়ে যায়। বাসিন্দাদের সতর্ক করতে শুরু হয় প্রচার। 


রবিবার ঘড়িতে তখন দুপুর ১টা বেজে ১৫...বাঘ এসেছে, বাঘ এসেছে বলে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকাজুড়ে। লাঠিসোটা হাতে গোটা গ্রাম উঠে আসে রাস্তায়। কাতরাতে কাতরাতে এক গ্রামবাসী দাবি করেন, তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল। রাত যত বেড়েছে ততই আতঙ্ক বাড়ে।


এদিকে, ৪ দিন পরও রয়্যাল বেঙ্গলকে খাঁচাবন্দি করতে না পারায় বন দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্থানীয় তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে বন কর্মীদের ঘিরে রবিবার বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। যদিও গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে বন দফতর।