শান্তনু নস্কর, হিন্দোল দে , বাসন্তী: পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayet Election) আগে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বাসন্তীর (Basanti) তিতকুমার গ্রামে তৃণমূলের (TMC) বিবাদ। দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি। এলাকায় গুলি চলারও অভিযোগ। রাস্তায় পড়ে গুলির খোল। তৃণমূল পার্টি অফিসও ভাঙচুর করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যার স্বামী গণেশ সরকার ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা দিলীপ হালদারের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। অভিযোগ, তার জেরে গতকাল গ্রামে বোমাবাজি শুরু হয়। গুলিও চলে বলে অভিযোগ। ঘটনায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী-সহ ৫ জনকে আটক করেছে বাসন্তী থানার পুলিশ। বাসন্তীর তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল অবশ্য দায় চাপিয়েছেন আইএসএফ, আরএসপি ও বিজেপির ঘাড়ে। বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বোমার সুতলি, গুলির খোল। আর এই সবের সঙ্গে ফের জড়িয়ে গেলে সেই নাম বাসন্তী। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে,তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার এই এলাকা। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ, পরপর বোমাবাজির শব্দে কেঁপে ওঠে তিতকুমার গ্রাম। গুলিও চলে বলে অভিযোগ! এলাকা দখল নিয়ে, তৃণমূল বিধায়ক ও তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধানের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল বলে দাবি করেছেন দলেরই একাংশ।


এমনকী ঘটনায় যে ৮জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন আমঝাড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যার স্বামীও। ধৃত তৃণমূল নেতার ছেলে অসিত সরকারের কথায়, এখানে দুটো দল আছে, একটি বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের অনুগামী জাহির খান ও পঞ্চায়েত মঞ্জুর খানের গোষ্ঠী। আমার বাবা যেহেতু জাহির খানের সঙ্গে চলত, তাই বাবাকে ফাঁসানো হয়েছে। দিলীপ হালদারের লোকজন এলাকা দখল করতে বোমাবাজি করেছে।


তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান আবার সরাসরি দলেরই বিধায়কের দিকে আঙুল তুলেছেন। যদিও গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ অস্বীকার করে বিরোধীদের বিঁধেছেন তৃণমূল বিধায়ক। বাসন্তী আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মঞ্জুর খানের কথায়, এরা সবাই তৃণমূল করে, মূলত এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করতে গোষ্ঠী তৈরি করতে চাইছেন জাহির খান। যারা গন্ডগোল করছে, তাদের ইগোর লড়াই আছে। একাধিকবার বসে মিটিয়েও দিয়েছি। কিন্তু সেই সমস্ত ঘটনা মূল নায়ক বিধায়ক। তাঁর প্রতিনিধিরা এসব করছে। সপ্তাহ খানেক আগে এখানে বোমাবাজির কথা বলেছিল, সেখানে গিয়ে উস্কানি দিয়েছিলেন বিধায়ক। সেই কারণে গতকালের গন্ডগোল।


২৭ অক্টোবর এই বাসন্তীতেই বিজেপির মণ্ডল সহ সভাপতিকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এক সপ্তাহ আগে  অর্থাৎ ৭ নভেম্বর বাসন্তীতে খড়ের গাদায় উদ্ধার হয়েছিল ব্যাগ ভর্তি বোমা। আর এবার গুলি-বোমায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা।  একাধিক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির নামে FIR দায়ের হয়েছে। দু’দফায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৮জনকে। ঘটনাস্থলে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট।