শান্তনু নস্কর, ক্যানিং: রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস, ওমিক্রন। আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। একই ঘটনা এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালেও। মাত্র তিনদিনেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের আটজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হলেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীও ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে গত তিনদিনে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ১৬ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। এইভাবে চলতে থাকলে অচিরেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকরা।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের পাশাপাশি বাসন্তী ব্লক হাসপাতালেও একজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
বর্তমানে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ৪৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এর মধ্যে চারজন চিকিৎসক ক্যানিং কোভিড হাসপাতালে কর্মরত। ফলে ৩৯ জন চিকিৎসকের উপরেই এই মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবার ভার রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে আচমকা করোনা আক্রান্ত হয়ে আটজন চিকিৎসক হোম কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়ায় রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক, ক্যানিং ২ নম্বর ব্লক, বাসন্তী, গোসাবা সহ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, বারুইপুর মহকুমার কুলতলি, জয়নগর এলাকার মানুষজনও ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। হাসপাতালের ওপিডি-তে প্রতিদিন প্রায় গড়ে দু’হাজার মানুষ আসেন চিকিৎসা করাতে। এছাড়া জরুরি বিভাগ সহ প্রসূতি বিভাগে প্রতিদিনই রোগীদের ভিড় লেগে থাকে। এমনিতেই যতজন চিকিৎসক এই হাসপাতালে রয়েছেন, তাতেই রোগীদের পরিষেবা দিতে নাভিশ্বাস উঠে যায় তাঁদের। এরপর দু’দিনের মধ্যে সাত-আটজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছে এই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, স্নায়ুরোগ বিসেশজ্ঞ, রেডিওলোজিস্ট, চোখ, কান, গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে হাসপাতালের সাধারণ পরিষেবা দিতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
এদিকে, ক্যানিং মহকুমা জুড়ে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই ঝোরোর মোড় এলাকায় ৫০ শয্যার একটি সেফ হোম চালু করা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই সেফ হোম পরিদর্শনে যান মহকুমাশাসক আজহার জিয়া সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা।
অন্যদিকে, ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা মানুষজনের মধ্যে নেই কোনও সামাজিক দূরত্ব। যা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।