গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: যখন সন্দেশখালি তোলপাড়, একাধিক ভয়াবহ অভিযোগে কাঠগড়ায় তৃণমূল। তখনই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কাকদ্বীপে বুধাখালিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে উঠেছে জমি দখলের অভিযোগ। কাকদ্বীপ থানায় শাসকদলের ৩ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক মহিলা। যদিও পুলিশের দাবি অভিযুক্তরা বেপাত্তা।  


সন্দেশখালিতে জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার (land grabbing allegation against TMC) অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, জমি কেড়ে নিয়ে নোনা জল ঢুকিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভেড়ি। সরকারি রাস্তা কেটে জমি দখল করা হয়েছে ভেড়ির জন্য। সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) তৃণমূল ব্লক সভাপতি শেখ শাহজাহান ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে এরকমই অভিযোগ। এই আবহে এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে জমি দখলের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কাকদ্বীপ থানায় শাসকদলের ৩ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক মহিলা। 


জমি ঘিরে দেওয়া হযেছে বাঁশের বাতা দিয়ে। লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের (TMC) পতাকা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধাখালিতে বসতবাড়ি-সহ ১৬ কাঠা জমি রয়েছে কমলা প্রধান নামে এক মহিলার।  ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে হওয়ার জমির দাম বেশ চড়া। মহিলার দাবি, স্বামীর মৃত্যুর পর পাথরপ্রতিমায় বাপের বাড়িতে থাকেন। অভিযোগ, তাঁর জমিতে নডজর পড়ে স্থানীয় ৩ তৃণমূল নেতা গোপাল ঘোষ, সিদ্ধার্থ জানা ও গৌর জানার। প্রথমে জমি লিখে দিতে চাপ দেন তাঁরা, রাজি না হওয়ায় রাতের অন্ধকারে জমিতে বেড়া দিয়ে, তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। 


অভিযোগকারিণী কমলা প্রধান বলেন, 'কী হুমকি দিচ্ছে, তুমি তিন দিনের মধ্যে যাবে তো যাও, না হলে আমাদের সই দিয়ে দাও। না হলে তুমি ওখানে গিয়ে বসবাস করতে পারবে না। তারপর এসে যখন দেখি, এখানে ব্যারিকেড করা হয়েছে, পতাকা পোঁতা হয়েছে। তৃণমূলের পতাকা। তৃণমূলের লোক। আমি থাকব, আমার ছেলে-মেয়ে কোথায় থাকবে। এইটুকুই জায়গা তো আমার এখানে, আর তো কোথাও নেই আমার।' শনিবার কাকদ্বীপ থানায় শাসকদলের ৩ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মহিলা। যদিও অভিযুক্তদের কারও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। 


এই ঘটনায় সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি (BJP slams TMC। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল। কাকদ্বীপ মণ্ডল- ২ -এর বিজেপি নেতা শিবপ্রসাদ প্রামাণিক বলেন, 'আজকে যেভাবে সন্দেশখালি, শেখ শাহজাহানের নেতৃত্বে ... যেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এখানে বাবলু প্রধান ও মন্টুবাবুরা দ্বিতীয় সন্দেশখালি করার জন্য একটা বদ্ধপরিকর পরিকল্পনা মাফিক ওই ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার জমি দখল করেছে, এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। যাঁদের নামে ওই ভদ্রমহিলা অভিযোগ করেছে, তাঁদের অতি সত্ত্বর গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।"


তৃণমূলের বুধাখালি অঞ্চল সভাপতি বাবলু প্রধান বলেন, 'বুধাখালি অঞ্চলে এরকম কোনও নজির নেই, জোর করে কারও কোনও প্রাপ্ত জায়গা বা চাষের জায়গা তৃণমূলের পক্ষ থেকে দখল করা হয়েছে, সেরকম কিন্তু নজির নেই। এরকম আমরা সমর্থন করে না। দলীয়ভাবে সেখানে পতাকা লাগিয়ে অধিগ্রহণ করা, এটা পার্টির কোনও নীতির মধ্যে পড়ে না।' পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তরা বেপাত্তা। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।


আরও পড়ুন: সন্দেশখালির ৪টি জায়গা থেকে তুলে নেওয়া হল ১৪৪ ধারা