শান্তনু নস্কর, ক্যানিং: একে জটিল অস্ত্রোপচার। তাও আবার গ্রামের সরকারি হাসপাতালে। এই অসাধ্য সাধনই করে দেখাল ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল। সেখানে এক গর্ভবতী মহিলার পেট থেকে প্রায় দু'কেজি ওজনের টিউমার বের করে আনলেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ রয়েছেন ওই মহিলা। তাঁর পেটের যমজ সন্তানও সুস্থই রয়েছে (Canning News)।


বিগত কিছুদিন ধরে অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে  যাচ্ছিল সন্তানসম্ভবা মহিলার পেট


ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা অনিন্দিতা পাত্রের সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। কয়েক মাস আগেই গর্ভে সন্তান ধারণ করেন অনিন্দিতা। পরীক্ষায় জানা যায়, যমজ সন্তানের মা হতে চলেছেন তিনি। কিন্তু বিগত কিছুদিন ধরে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছিল তাঁর পেটের। প্রায় প্রতিদিনই ফুলে যাচ্ছিল পেট। তাতে চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন অনিন্দিতা (South 24 Parganas News)। 


পরীক্ষা করানো হলেই ধরা পড়ে আসল সমস্যা। চিকিৎসকেরা দেখেন যে, অনিন্দিতার পেটে বিশালাকার একটি টিউমার গজিয়ে উঠেছে। তাতে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলা হয় অনিন্দিতাকে। বিষয়টি যে জটিল সে কথাও জানানো হয় তাঁকে। তাতে রোগী নিজে তো বটেও, চিকিৎসকরাও আশঙ্কিত ছিলেন। কিন্তু শেষ মেশ অস্ত্রোপচারে সম্মত হন দুই পক্ষই। 


আরও পড়ুন: Recruitment Scam:চাকরি-বিক্রির বৈঠক হত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসেই, রিমান্ড লেটারে বিস্ফোরক দাবি ইডি-র


অবশেষে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে ভর্তি করা হয় অনিন্দিতাকে। গত সোমবার সেখানে অস্ত্রোপচার হয় অনিন্দিতার। হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক শ্রুতর্ষি মণ্ডলের তদারকিতে, চিকিৎসক আসিফ কামাল এবং বিশ্বনাথ সর্দারের সহযোগিতায় ওই জটিল অস্ত্রোপচারটি সফল হয়। অনিন্দিতার পেট থেকে বের করা হয় ১ কেজি ৭৫৫ গ্রাম ওজনের একটি টিউমার। 


জটিল অস্ত্রোপচার সফল ভবে সম্পাদন করে নজির গড়ল ক্যানিংয়ের সরকারি হাসপাতাল


ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার, চিকিৎসক সুরেশ সর্দার জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারটি সফল হয়েছে। সুস্থ রয়েছেন অনিন্দিতা। তাঁর গর্ভস্থ সন্তানরাও সুস্থ রয়েছে বলে জানান তিনি। চিকিৎসকদের এই তৎপরতায় খুশি রোগীর পরিবার-পরিজনরাও। হাসপাতালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আগামী দিনে জটিল অস্ত্রোপচারের সাফল্য় আরও বাড়বে বলে মনে আশাবাদী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


সরকারি হাসপাতালে এমন জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলে, আগামী দিনে সরকারি হাসপাতালের  প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাও ফিরবে বলে মনে করা হচ্ছে। শহরের নামীদামি নার্সিংহোমে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালার পরিবর্তে, ঘরের কাছে সরকারি হাসপাতালেই মিলবে সব পরিষেবা। তার জন্য় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আর ওজোর দেওয়া উচিত বলে মত সাধারণ নাগরিকদের।