দক্ষিণ ২৪ পরগনা:  জোড়া খুনের পরেই জয়নগরে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়।  তৃণমূল নেতা খুনের পরই গ্রাম ঘিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক সিপিএম কর্মী-সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। ঘণ্টা চারেক ধরে চলে তাণ্ডব, দাবি গ্রামবাসীদের। তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের অনুগামীদের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ ওঠে।  আর এবার জয়নগরের দলুয়াখাকি গ্রামে ১৬টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ কাণ্ডে অবশেষে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে  (3 Arrested)। 


'আমরা সিপিএম করি বলে কি অপরাধ করেছি ?'


এদিকে অগ্নিকাণ্ডে পর গ্রামে ফিরে নির্যাতিতাদের একজন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, 'আমাদের উপর আক্রোশটা ছিল ভোটের থেকে সব সময়। আমরা সিপিএম পার্টি করি বলে ওই জন্যে। আমরা সিপিএম করি বলে কি অপরাধ করেছি ? টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি কার্যত সবই চলে গিয়েছে হামলায়। কোথায় থাকবেন ? জিজ্ঞেস করতেই কী করব, খোলা আকাশের নিচেই বলতে বলতে ফের গলা বুজে এল নির্যাতিতার। 


কাতর আর্জি নির্যাতিতাদের 


আক্ষেপের সঙ্গে ওই নির্যাতিতা আরও জানান,' পুলিশের পা জড়িয়ে ধরেছি। পুলিশ পা ঝাকা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। পুলিশ কী বাঁচাবে ! পুলিশ একদিন এসে বলল না যে, এক ফোঁটা জল দিচ্ছি, এই নাও খাও।' এরপর তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা সিপিএম-র পার্টি অফিসের কাছে সাহায্যের অনুরোধ করেছেন। তারা যতটা পেরেছে করেছে পার্টি অফিসের তরফে। অপর এক নির্যাতিতা জানালেন, 'আমাদের এই পর্যন্ত খাওয়া নেই, দাওয়া নেই। আমরা এই আতঙ্কের মধ্যে কীভাবে বেঁচে থাকতে পারি ? এইরকম শুনতে পাচ্ছি যে, পুলিশ প্রশাসন কতক্ষণ থাকবে? চলে গেলেই 'আমরা' (হামলাকারীরা) ফের ঢুকব। যেগুলি বাকি আছে সেগুলিকেও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেব !'


ঠিক কী হয়েছিল ?


মৃত সইফুদ্দিন লস্কর ছিলেন তৃণমূলের বামনগাছি অঞ্চলের সভাপতি। তাঁর স্ত্রী বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান। পাল্টা এক দুষ্কৃতীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে।স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। বাড়ির কাছেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষকৃতীরা। পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। রাজনৈতিক কারণ? নাকি ব্যক্তিগত শত্রুতা? কী কারণে খুন খতিয়ে দেখছে জয়নগর থানার পুলিশ।


আরও পড়ুন, আজ পেট্রোলের দর কমল একাধিক শহরে, কী দর কলকাতায় ?


বগটুইয়ের ছায়া ?


তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ খুনের পর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল বীরভূমের বগটুই গ্রাম। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় শিশু-মহিলা সহ ১০ জনের। ২০২২-এর ২১ মার্চ, বগটুইয়ের সেই ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে তৃণমূলকে নিশানা করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। অন্তর্দ্বন্দ্বে তৃণমূল নেতা খুন হওয়ায় দুষ্কৃতীদের বাঁচাতে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের নিশানা করেছে শাসক দল, অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর।গ্রাম ঘিরে আগুন ধরিয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালানো হয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও দমকল দেরিতে ঢুকেছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। দমকলের গাড়িই ঢুকতে দেওয়া হয়নি, পাল্টা দাবি দমকল আধিকারিকের।'তৃণমূল নেতা খুনের পর জনরোষেই হামলা', পাল্টা দাবি তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের।