হিন্দোল দে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভাঙড়ে তোলাবাজির অভিযোগ, কাঠগড়ায় তৃণমূলের উপপ্রধান। তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ। ভাঙড়ের চন্দনেশ্বরে ৫০ কাটা জমি কেনেন তপসিয়ার ব্যবসায়ী। আটার মিল তৈরির জন্য ৫০ কাটা জমি কেনেন ব্যবসায়ী়। জমি কেনার পর টাকা চাওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। ৭ লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। এদিকে ৭ লক্ষ টাকা দিতে নারাজ হতেই ব্যবসায়ীকে 'খুনের হুমকি' তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন, আটক হুমায়ুনের ছেলে ! 'তাঁকে গ্রেফতার করবে, অনেক নাটক হবে..', বিস্ফোরক অধীর-শমীক
অভিযোগ, ভাঙড়ে কারখানা তৈরির জন্য়, ব্য়বসায়ীর কাছ থেকে এই ভাবে তোলা তুলছেন তৃণমূল নেতা। অভিযোগকারী ব্য়বসায়ী শাহিদ হোসেন বলেন, 'আলাউদ্দিন মোল্লা, যে আছেন উপপ্রধান, ওঁর দলবল এসে বাধা দিল, এখানে কাজ করতে দেব না। তারপরে উনি বলছেন, আমার সঙ্গে বসে আপনাকে আলোচনা করতে হবে। না আলোচনা করলে কাজ করতে দেব না। আমাকে বললেন উনি ৭ লক্ষ টাকা চাই। ৫ লাখ ৩০ হাজার, এতে ফাইনাল হল। ২ পার্টে পেমেন্ট করেছি। নগদ দিয়েছি। '
ব্য়বসায়ীর দাবি, ভাঙড়ে আটা মিল করার জন্য় গত ফেব্রুয়ারিতে ৫০ কাঠা জমি কিনেছেন তিনি। কিন্তু, অভিযোগ, প্রথম থেকেই তাঁকে কাজ করতে বাধা দেয় তৃণমূল নেতা আলাউদ্দিন মোল্লার অনুগামীরা। অভিযোগ, কখনও ভেঙে দেওয়া হয় কারখানার পাঁচিল। উপড়ে ফেলা হয় নেমপ্লেট। কখনও কাজ করতে দেওয়া হয় না লেবারদের। ৫০ কাটা যে জমি কিনেছিলেন, এটাই সেই গেট। আটা মিল করবেন বলে। কিন্তু উপপ্রধান কাজে বাধা দিচ্ছে। ৭ লক্ষ টাকা তোলাবাজি। তেমনটাই অভিযোগ।
ব্য়বসায়ীর দাবি, এরপর তাঁর কাছে ৭ লক্ষ টাকা তোলা দাবি করেন পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান আলাউদ্দিন মোল্লা। শেষমেষ ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায় রফা হয়। অভিযোগ, সেই টাকা দেওয়ার পরও উপদ্রব থামেনি। নতুন করে শুরু হয় তোলার জুলুম। অভিযোগকারী ব্য়বসায়ী শাহিদ হোসেন বলেন, তারপরে আমাদের কাজ কিছুদিন করতে দিল। তারপর ফের ১৫ দিন পর ওঁর দলবল এসে আমাদের কাজটা বাধা দিল। বলল গুলি মেরে দেব। বোমা মেরে দেব। আমার ১০টা লেবার ছিল। ভয়ে চলে গেছে। আমার জানের ভয় আছে। তাই করতে পারছি না। এরপরই এই ভিডিও প্রকাশ্য়ে আনেন ব্য়বসায়ী। যেখানে তৃণমূলের উপপ্রধানকে তিনি টাকা দিচ্ছেন, তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
অভিযোগ, এনিয়ে স্থানীয় মাধবপুর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে, পাল্টা মীমাংসার কথা বলা হয়। অভিযোগকারী ব্য়বসায়ীর ছেলে ইকবাল হোসেন বলেন, প্রত্য়েক ১৫ দিন অন্তর ওরা লোক পাঠায়। আগ্নেয়াস্ত্র-সহ। এই করে দেব। ওই করে দেব। ২০ তারিখ রাতে আমরা মাধবপুর থানায় গেছি। ওরা বলছিল, আমরা এই বিষয়টা মীমাংসা করে মিটিয়ে দেব। আমরা কতবার মীমাংসা করব? কতবার পয়সা দেব?
এরপর, ভাঙড় ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায় ব্য়বসায়ীর পরিবার। পাশাপাশি, অভিযোগ জানান তৃণমূল নেতৃত্বের কাছেও। ক্য়ানিং পূর্ব ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক ও তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, যদি এই ধরনের ভিডিও থাকে, সেই টাকাটা সত্য়িকারের ঘুষের টাকা, নাকি অন্য় কোনও পারপাসের টাকা, সেটা আমি খোঁজ খবর নিয়ে ওদের সঙ্গে না কথা বলে এই বিষয়টা পরিষ্কার বলতে পারছি না।