গৌতম মণ্ডল, পাথরপ্রতিমা: একদিন বা দু'দিন নয়, টানা তিন মাস বাঘের আতঙ্ক পাথরপ্রতিমায়। স্থানীয় পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ গ্রামবাসীরা। গণস্বাক্ষর-সহ জমা পড়ল আবেদনপত্র। বাঘকে জঙ্গলে ফেরানোর আর্জি জানালেন গ্রামবাসীরা। আপাতত নাইলনের জাল দিয়ে এলাকা ঘিরে জঙ্গল ঘিরে রেখেছে বন দফতর। আতঙ্কে দিনযাপন স্থানীয় মানুষজনের। (Patharpratima News) গোটা ঘটনায় বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়দের একাংশ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার উপেন্দ্রনগরের ঘটনা। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে সেখানে বাঘের আতঙ্ক। ঠাকুরাইন নদীর চর থেকে ধানের জমিতে একাধিক বার বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। এর ফলে আতঙ্কে দিনযাপন করছেন মাইতিপাড়ার বাসিন্দারা। বন দফতরের তরফে পাশের সংরক্ষিত ধনচির জঙ্গল নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে যদিও। তবে আতঙ্ক কাটছে না। (Royal Bengal Tiger)
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নাইলনের জাল দিয়ে জঙ্গল ঘিরে ফেলা হলেও, তার পরও প্রায়শ বাঘের আনাগোনা টের পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার বন্য জন্তুর রক্তও দেখা গিয়েছে। গ্রামবাসীদের অনুমান, বন্য শূকর শিকার করেছে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটি। তাই স্থানীয় শ্রীধরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয়েছেন সকলে।
স্থানীয় বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর-সহ একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন পঞ্চায়েতে। বাঘের উপদ্রব দূর করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে চিঠিতে। বলা হয়েছে, বাঘের আতঙ্কে নদীতে মাছ বা কাঁকড়া ধরতে যেতে পারছেন না স্থানীয়রা। চাষ-আবাদও প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়। এর ফলে প্রান্তিক মানুষদের জীবন-জীবিকায় সঙ্কট নেমে এসেছে।
এ নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জয় সাউ মুখ খুলেছেন। চিঠি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, জেলাশাসক, বন দফতর এবং অন্যান্য বিভাগের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য বনাধিকারিক মিলন মণ্ডল জানিয়েছেন, বাঘ ধনচির জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় রয়েছে। বসতি এলাকায় ঢুকছেই না। তবুও জঙ্গলের দিকটি নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু তাতেও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না গ্রামবাসীরা। এতদিন ধরে আতঙ্কে রয়েছেন। বন দফতরের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। তাই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।