কলকাতা : অবশেষে খোঁজ মিলল মুম্বইয়ে গিয়ে নিখোঁজ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের পরিযায়ী শ্রমিকের। পরিবারের দাবি, বাড়ির লোকজনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে বাবাই সর্দারের। পরিবারের অভিযোগ, বাংলাদেশি সন্দেহে বাবাইকে নাগপুরে এক ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছিল, সেই খবর সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁর যাবতীয় নথি যাচাই করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। 

আরও পড়ুন, কলকাতায় কলেরা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৪ বছরের শিশুকন্যা ! কীভাবে পানীয় জলের মধ্যে এল ভিব্রিও কলেরি ? খবর গেল স্বাস্থ্যভবন ও পুরসভায়

ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে, নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই আবহে এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাংলাভাষী যুবককে মুম্বইয়ে আটকে রাখার আশঙ্কা করছিল পরিবার। বিষ্ণুপুরের জুলপিয়া গ্রামের বাসিন্দা ২৬ বছরের বাবাই সর্দার। পরিবারের দাবি, বছর তিনেক আগে কাজের খোঁজে মুম্বই যান বাবাই। সেখানে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করেন। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, সম্প্রতি তারা জানতে পারেন, শুধু বাংলা বলার কারণে, বাংলাদেশি সন্দেহে বিষ্ণুপুরের ওই যুবককে মুম্বইয়ে আটক করা হয়েছে। 

সম্প্রতি আটক পরিযায়ী শ্রমিকের মা রীতা সর্দার বলেছিলেন, বাংলাদেশি সন্দেহে ছেলেদের ধরাধরি করছে মুম্বইয়ে। আমরা ওকে ফোন করলাম, দেখলাম সুইচ অফ। যার কারণে আমাদের সন্দেহ হয়েছে যে, কোনও বাংলাদেশি সন্দেহে হয়তো ওকে ধরে নিয়ে গেছে নাগপুর সেন্টার ওখানে কোনও জায়গায় আটকানো আছে।' আটক পরিযায়ী শ্রমিকের বাবা দেবু সর্দার বলেছিলেন, আমার দাদু, আমার বাবা এই রাজ্যে দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে জন্ম নিয়েছে। তাহলে আজকে আমার ছেলে, তার নাতি হয়ে যদি মুম্বইয়ে কাজে যায়, বাঙালি হওয়া কি অপরাধ?' ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মহারাষ্ট্রে যায় তৃণমূলের ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল। পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার তরফেও মুম্বইয়ে টিম পাঠানো হয়।

অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থেকে NDA শাসিত বিহারের গয়ায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গিয়েছেন ১০ জন।  অভিযোগ,সেখানে বাংলায় কথা বলায় বাংলাদেশি সন্দেহে পুলিশি হেনস্থার শিকার হন তাঁরা। গয়া ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক জাহাঙ্গির আলম বলেন,'আধার কার্ড দেখালাম, পুলিশ বলল না, তোমরা সব জাল এসবগুলো। আমাদের মোবাইলগুলো বাজেয়াপ্ত করে নিল পুলিশ। বলল, ৩ দিন পর আসবি তোদেরকে মোবাইল দেওয়া হবে। মারধর করা হয়েছিল।' এইভাবে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থার অভিযোগ যত আসছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।