সুকান্ত দাস, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: মৈপীঠে ফের বাঘের আতঙ্ক। বুধবার নদীর পাড়ে পায়ের ছাপ দেখে বন দফতর দাবি করেছিল জঙ্গলে ফিরে গেছে বাঘ। তার পরের দিনই বোসেরঘেরি এলাকার বাসিন্দারা দাবি করলেন, রাতে বাঘের গর্জন শোনা গেছে। মিলেছে পায়ের ছাপ। যদিও ওই পায়ের ছাপ বাঘের কিনা, তা এখনও নিশ্চিত করেনি বন দফতর। 


হেতাল, গরাণের বনে কাদা মাটিতে এ কার পায়ের ছাপ? ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠে ফের ফিরল বাঘের আতঙ্ক। মঙ্গলবার থেকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে মৈপীঠের কিশোরীমোহনপুর, বৈকুণ্ঠপুরের বাসিন্দারা। ২ দিন ধরে শব্দবাজি ফাটিয়ে চিৎকার করে জাল দিয়ে ঘিরে খাঁচা পেতে, বাঘ ধরার চেষ্টা চালায় বন দফতর। শেষমেশ বুধবার নদীর পাড়ে পায়ের ছাপ দেখে বন দফতর দাবি করে, নদী পেরিয়ে আজমলমারির জঙ্গলে ফিরে গেছে বাঘ। তার একদিন পরই ফের গ্রামবাসীরা দাবি করলেন, মাঝরাতে শোনা গেছে বাঘের গর্জন। মিলল পায়ের ছাপও। এবার নগেনাবাদ বোসেরঘেরি এলাকায়। বাঘ যাতে কোনওভাবে লোকালয়ে না ঢুকতে পারে, তার জন্য জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে জঙ্গল লাগোয়া এলাকা। তবে, ওই পায়ের ছাপ আদৌ বাঘের কিনা তা খতিয়ে দেখছে বন দফতর।


এর আগে বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহি থেকে ধরা হয় ওড়িশার সিমলিপাল থেকে পালানো বাঘিনীকে। গত ২৯ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ঘুরে শেষে বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহিতে এসে ধরা পড়ে বাঘিনী। বন দফতর সূত্রে খবর, ওড়িশার সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান থেকে পালিয়ে এ রাজ্যের বেলপাহাড়ির কটাচুয়ার জঙ্গল থেকে সফর শুরু করে সে।
কাঁকড়াঝোড়ের ময়ূরঝর্নার জঙ্গল থেকে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা, তারপর পার্শ্ববর্তী কুইলাপাল বিটে কেশরার জঙ্গল হয়ে মানবাজারের ডাঙ্গরডির জঙ্গলে টের পাওয়া যায় তাঁর অস্তিত্ব। রেডিও কলারের মাধ্য়মে তার অবস্থান বোঝা গেলেও, বাঘিনীকে বাগে আনতে নাকানিচোবানি খেতে হয় বন দফতরের কর্মীদের। বাঘিনীকে ধরতে আনা হয় বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন স্নিফার ডগ ‘গোল্ডি’-কে। নামানো হয় আধাসেনা। তৈরি করা হয় বিশেষ টিম। এর মধ্য়েই বন দফতর সূত্রে জানা যায়,
ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ঘুরে বাঁকুড়ার রানিবাঁধের গোপালপুর গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে রয়েছে সে। ড্রোনের সাহায্য়ে শুরু হয় নজরদারি। শনিবার বাঘিনীকে লক্ষ্য় করে ২ বার গুলি ছোড়া হলেও বাগে আনা যায়নি তাকে। এরপর গোঁসাইডিহির জঙ্গলে তার অবস্থান বোঝা যেতেই তৎপরতা বাড়ায় বন দফতর। ড্রোনের সাহায্য়ে অবস্থান বুঝে বাঘিনীকে লক্ষ্য় করে ঘুম পাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তাতেই কাবু হয় বাঘিনী।


আরও পড়ুন: Dulal Sarkar Death:'প্রাণনাশের আশঙ্কা করছি, এখনও যায়নি চোখরাঙানি' বিস্ফোরক দুলাল সরকারের স্ত্রী