রঞ্জিত হালদার, উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, আশাবুল হোসেন, কলকাতা : যে বুথে বিরোধীরা জিতেছে, সেখানে তৃণমূল (TMC) কোনও কাজ করবে না। বিরোধীরা কাজ করে দেখাক। এই ভাষাতেই বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা (Saokat Molla)। গুন্ডা, তোলাবাজদের ভাষায় কথা বলছেন তৃণমূল বিধায়ক, পাল্টা আক্রমণ করেছেন নৌশাদ সিদ্দিকি (Nawsad Siddique)।
যে বুথে বিরোধীরা জিতেছে, সেখানে তৃণমূল কোনও কাজ করবে না। ভাঙড়ের (Bhangae) মাটিতে দাঁড়িয়ে কার্যত এই ভাষাতেই বিরোধীদের হুমকি দিলেন ক্য়ানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা। যা ঘিরে চরমে উঠেছে বিতর্ক। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ৬৭ শতাংশ সংখ্য়ালঘু অধ্য়ুষিত ভাঙড়ে তৃণমূলকে হারিয়ে জয়ী হন বাম-কংগ্রেস সমর্থিত ISF প্রার্থী নৌশাদ সিদ্দিকি। এবারের পঞ্চায়েত ভোটেও তৃণমূলকে কড়া টক্কর দেওয়ার চেষ্টা করে আইএসএফ। এই প্রেক্ষাপটে রবিবার ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিজয়গঞ্জ বাজারে তৃণমূলের একটি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিরোধীদের উদ্দেশে কার্যত হুমকি দিলেন দাপুটে তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা। পাল্টা বিরোধীরা বলছে, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ই তো দাবি করেছিলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে না কি তাঁরা দল-মত-রং দেখেন না।
ক্য়ানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক ও ভাঙড়ের পর্যবেক্ষক সওকত মোল্লা বলেছেন, গাল ভরা প্রতিশ্রুতি, মধু মাখা প্রতিশ্রুতি গোটা ভাঙড়ে উন্নয়নের স্বর্গ বানিয়ে দেবে। ভাঙড়ের মানুষের আর কোনও অভাব থাকবে না। বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরিবাকরি করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্য়া থাকবে না। সবটা ভুয়ো প্রতারণা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যারা তৃণমীল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে, বিশেষ করে যে সমস্ত বুথ জিতেছে, আমরা প্রাথমিকভাবে সেই বুথগুলোতেই কাজ করব। যেগুলোতে ISF জিতেছে, ওরা নিজেরা কাজ করুক না। করে দেখাক না। কতটা কাজ করতে পারে। সেখানকার মানুষ বুঝুক, এদেরকে ভোট দিলে, ভাঙড়ে কোনও উন্নয়ন হতে পারে না। ভাঙড়ে রক্ত ঝরতে পারে।
পাল্টা ভাঙড়ের ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি বলেন, বক্তব্য় দেখে মনে হল, তিনি আইনসভার সদস্য় নয়। পাড়ার গুন্ডা। মস্তান, তোলাবাজ। সমাজবিরোধীর মতো কথা বলছে। ন্য়াশনাল হিউম্য়ান রাইটস কমিশন তাঁকে নটরিয়াস ক্রিমিনাল বলেছে। উনি সেই সার্টিফিকেট বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করছে। এরা তৃণমূলের রত্ন। এরা সমাজবিরোধী কথা বলবে, তৃণমূল প্রতিবাদ করবে না। মানুষের রায়কে এরা প্রাধান্য় নেয় না।
দল আসে, দল যায়, কিন্তু রাজ্য় হোক কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার। পঞ্চায়েত কিংবা পুরসভা। প্রতিষ্ঠান হিসাবে সবসময় থেকেই যায়। তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান নিয়ে কেন পক্ষপাতিত্বের হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।