অরূপ পাঁজা, বিষ্ণুপুর (দক্ষিণ ২৪ পরগনা): গড়পরতার মধ্যে নিজেকে ফেলতে চাননি কখনও। বরং শুরু থেকেই লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন। হাতেনাতে তার ফল পেলেন বাংলার ছেলে অর্ক মণ্ডল। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল সার্ভিসেস (ISS) পরীক্ষায় দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করে নজির গড়লেন তিনি। 


দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা অর্ক। ২০১৮ সালে কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে স্নাতক হন। শুরু থেকেই রাশিবিজ্ঞানের (Statistical Science) প্রতি আকর্ষণ ছিল তাঁর। সেই মতোই পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যান। তাতেই সাফল্য এল। 


অর্কর বাবা পেশায় চিকিৎসক। মা হাইস্কুলের শিক্ষিকা। বরাবরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন অর্ক। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে স্কুলস্তরের পড়াশোনা। স্বপ্নপূরণে আগাগোড়া অর্কর পাশে ছিলেন তাঁর মা-বাবা।


আরও পড়ুন: শীত শুরুতেই কনকনিয়ে ঠাণ্ডা, এক ঝলকে দেখে নিন কোন জেলায় তাপমাত্রা কত নামল


তাই আইএসএস পরীক্ষায় (Indian Statistical Services) ছেলের সাফল্য বর্ণনা করতে গিয়ে আনন্দে চোখে জল এসে গেল তাঁর বাবা তারক মণ্ডলের। পরিবারের বাকি সদস্যরাও তাঁর সাফল্যে অভিভূত। 


অর্কর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, এ বছর আইএসএস-এ শূন্যপদ ছিল ১১টি। তাতে জায়গা করে নিতে মার্চ মাস থেকে কার্যত বইয়ে মুখ গুঁজেই কাটিয়েছেন। দিন রাত এক করে পড়াশোনা করে গিয়েছেন। 


পড়াশোনা থেকে মনোসংযোগ যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য নেটমাধ্যম থেকে যাবতীয় অ্যাকাউন্টও ডিলিট করে দিয়েছিলেন অর্ক। পড়াশোনার প্রয়োজনেই শুধু ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন। 


আরও পড়ুন: বাঘ এখনও অধরা, বনবস্তির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর চিন্তা-ভাবনা


অর্ক অবশ্য তাঁর সাফল্যের কৃতিত্ব মা-বাবাকেই দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, খুব বেশি সময় দিতে না পারলেও, তিনি কী পড়ছেন, কী সাহায্যের প্রয়োজন, নিয়মিত খোঁজ রাখতেন বাবা। স্কুল সামলে মুখে খাবার পর্যন্ত তুলে দিতেন মা। তাতেই সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে পেরেছেন। 


বিষ্ণুপুরের ছেলে অর্কর সাফল্যে খুশি এলাকার মানুষ জনও। খুব শীঘ্র প্রশিক্ষণ নিতে যেতে হবে তাঁকে। তবে প্রশিক্ষণ শেষ করে কলকাতাকেই কর্মস্থল হিসেবে বেছে নিতে চান অর্ক। 


এ বারে আইএসএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান পেয়েছেন অমিত কুমার। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন অর্ক এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছেন মণীশ কুমার।