রাজা চট্টোপাধ্যায়, আলিপুরদুয়ার : তিনি আছেন। শুক্রবার, একরাতে পর পর দু’বার বন দফতরের পাতা ক্যামেরা ট্র্যাপে দেখা দিয়েছেন। ২৩ বছর পর আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) বক্সার (Buxa) জঙ্গলে নিজের অস্তিত্বের জানান দেন বাঘমামা। 

ছবি পেলেও এখনও পর্যন্ত, বাঘটির (Royal Bengal Tiger) অবস্থান নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি বন দফতর। এই পরিস্থিতিতে বক্সার জঙ্গল সংলগ্ন বস্তির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বন দফতর। তাঁদের অন্যত্র সরানোরও ভাবনা-চিন্তা চলছে। 


প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই পম্পা বস্তিতেই থাকেন শ্যাম, অ্যালবার্টদের মতো আরও অনেক পরিবার। বছর পাঁচেক আগে একবার প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। বাঘের দেখা মেলায় তাঁদের অন্যত্র সরানোর ভাবনা-চিন্তা চলছে বলে, ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন। তাঁরা বলছেন, নায্য আর্থিক সাহায্য বা পুনর্বাসন পেলে, সরে যেতে আপত্তি নেই। 

আরও পড়ুন:


নৌকায় হঠাৎ বাঘের হানায় ক্ষত-বিক্ষত মৎসজীবী, অবস্থা আশঙ্কাজনক


বক্সার পম্পা বস্তির বাসিন্দা শ্যাম ছেত্রী বলেন, ' রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কথা শুনেছি, এখনও চোখে দেখিনি। দেশের স্বার্থে জায়গা ছাড়তে রাজি। কিন্তু রেডিমেড জায়গা দিতে হবে।  এখনকার মূল্য ১৫ লক্ষ টাকা দিলে ছেড়ে দেব'।  বাসিন্দা অ্যালবার্ট সাংমা বলেন, ' খুব ভালো খবর, এই এলাকার গর্ব রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। গ্রামবাসীদের নিয়ে আগে বৈঠক হয়েছিল, ১৫ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। শুনেছি মন্ত্রী আসবে তাঁর সঙ্গে কথা বলব, সহযোগিতা করব।' 


শুক্রবার রাতে ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা পড়া দু’টি ছবি।  একই বাঘের কি না তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে বনদফতর।


সম্প্রতি এলাকায় বার বার বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যাওয়ার পরই বসানো হয় ক্যামেরা ট্র্যাপ। তাতেই ছবিতে ধরা দেন বাঘমামা।  এরপরই সতর্কতা জারি করেছে বন দফতর। বক্সায় আপাতত বন্ধ জঙ্গল সাফারি (Jungle Safari)। জানালেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পাশাপাশি, আশেপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিট অফিসার, বন কর্মীদের পাঠানো হয়েছে বক্সায়। বাঘের সন্ধান পেতে চলছে কড়া নজরদারি। মঙ্গলবার কলকাতা থেকে গিয়েছে বন দফতরের আরও একটি দল।


 

প্রায় ২ যুগ পর বক্সায় বাঘের দেখা। বন দফতর সূত্রে খবর, এর আগে ১৯৯৮ সালে বাঘ দেখা গিয়েছিল বক্সার জঙ্গলে। তারপর আর দেখা মেলেনি।  এই পরিস্থিতিতে এখন বাঘের উপযুক্ত বাসস্থান তৈরি করতে উদ্যোগী বন দফতর।