ঝিলম করঞ্জাই , কলকাতা : শিশুদের জিনঘটিত বিরল রোগের চিকিত্সা। ওষুধের খরচই বছরে দেড় থেকে আড়াই কোটি টাকা! শিশুকে বাঁচিয়ে রাখতে আজীবন দিয়ে যেতে হবে এত দামি ওষুধ। রোগের নাম স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি (Spinal muscular atrophy)। শিশুদের জন্মগত জিনঘটিত এই রোগের আগে কোনও চিকিত্সা ছিল না। কয়েক বছর হল এর ওষুধ বেরিয়েছে। যে ওষুধ আজীবন দিয়ে যেতে হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের বক্তব্য, 'এই রোগে শিশুদের হাঁটাচলার বেশি ক্ষমতা থাকে না। তাদের হুইলচেয়ারেই কাটাতে হয়। কারণ, যে নার্ভ হাঁটাচলার মাংসপেশিকে নিয়ন্ত্রণ করে, এই রোগে সেই নার্ভেরই ক্ষতি হয়। ' পিয়ারলেস হাসপাতালে স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি আক্রান্ত ১৩ জন শিশুর এই অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিত্সা শুরু হয়েছে। ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার উদ্যোগে বিনামূল্যে এই ওষুধ ৩ বছর দেওয়া হবে শিশুদের। হাসপাতাল সূত্রে দাবি, পূর্ব ভারতে প্রথম এই রোগের ওষুধ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল।
পিয়ারলেস হাসপাতালের শিশু চিকিত্সক সংযুক্তা দে জানিয়েছেন, শিশুর জন্মের ৬ মাসের মধ্যেই এই রোগের বিষয়টি নজরে আসে। এই অসুখের চিকিৎসার খরচ অনেক বেশি। সেখানে ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থা যে এগিয়ে এসেছেন বাচ্চাদের মুখ চেয়ে, তার জন্য কৃতজ্ঞতাপ্রকাশ করেছেন অসুস্থ শিশুদের অভিভাবকরা। তাঁদের একজন জানালেন, 'আমরা ভাবতেই পারিনি এত দামি ওষুধ দিতে পারব। আমরা কৃতজ্ঞ। '
পিয়ারলেস হাসপাতাল সূত্রে খবর, ১৩ জন শিশুকে দুটি ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ৭ জনকে যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বছরে তার দাম দেড় কোটি টাকা। আর বছরে আড়াই কোটি টাকা দামের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে ৬ জনকে। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, এই জিনঘটিত ত্রুটির বাহক যদি শিশুর বাবা-মা দুজনেই হন, তাহলে সন্তানের এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদিও বাবা, মা বাহক হলেও, তাঁদের মধ্যে উপসর্গ দেখা যায় না।
চিকিত্সকদের মতে, প্রতি ৫০ হাজার শিশুর মধ্যে একজনের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সম্প্রতি আরও একটি নতুন ওষুধ বেরিয়েছে। গবেষকদের বক্তব্য, নতুন ওষুধ শিশুর জন্মের প্রথম ৯ মাস বয়েসের মধ্যে দিলে, রোগের গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
ঝিলম করঞ্জাই, এবিপি আনন্দ