প্রকাশ সিনহা, কলকাতা:  SSC-র নবম-দশমের চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান ৫৭১ দিনে পড়ল। গান্ধীমূর্তির কাছে চলছে এই অবস্থান। পুজো কেটে গেলেও তাঁদের কোনও সুরাহা হল না। আজও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন কোনও কোনও চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের প্রশ্ন, কবে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারবেন? কবে সমস্যার সমাধান হবে। 


হকের পাওনা চাকরির দাবিতে পুজো কেটেছে পথেই। কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির নিচে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা (SSC Protest) । বৃহস্পতিবার, দশমীর দিন তাঁদের আন্দোলন ৫৭০ দিনে পড়ল (SSC REcruitment Scam)। আর এই দিনই তাঁদের সঙ্গে সেখানে গিয়ে দেখা করলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Bose)। সেখানে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। বিজয়া দশমী উপলক্ষে চাকরিপ্রার্থীদের মিষ্টিমুখও করান তিনি। 


এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করলেন বিমান বসু


পুজোর মধ্যেই, দু'দিন আগে ধর্না মঞ্চে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং সেভ ডেমোক্র্যাসির অধ্যাপক সদস্যরা। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন সেলিম। সেখানে রাজ্যকে একহাত নেন তিনি। বলেন, "যার যেটা করা উচিত, সে সেটা না করলে, এরকমই হয়।  মুখ্যমন্ত্রীর ফিতে কাটা কাজ নাকি? এরা এখানে বসে আছে। তৃণমূল বলবে, কোর্ট যা করার করবে। কোর্ট কী? কোর্টের কথা কি রাজ্য সরকার শোনে?" আন্দোলকারীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করা হয় ওই দিন।


রাজ্যের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এর আগে আন্দোলনকারীদের পুজোয় বাড়ি ফিরতে আর্জি জানিয়েছিলেন। কুণাল সেই সময় বলেন, "আমরা অনুরোধ করছি, ওঁরা উঠে যান।  এসএসসি-র তরফে হাইকোর্টকে দু'টি অপশন দেওয়া হয়েছে।"


এর পর, নবমীর সকালে ধর্নামঞ্চে হাজির হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের দেখা করানোর আশ্বাসও দিলেন।সেখানে শুভেন্দু বলেন, "অনেকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কী হল সেসবের? সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আদালতে হলফনামা দিয়ে বলুক, এদের সকলের চাকরি হোক। সরকারের কোনও আপত্তি নেই।"


নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও অব্যাহত


নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এই মামলার তদন্ত করছে, যা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও চলছে। তার মধ্যেই বুধবার ইডি-র বেশ কয়েক জন আধিকারিকের কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কার্যকাল শেষ হয়ে যাওয়ায় যাঁদের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে যুক্ত আধিকারিকরাও।