কলকাতা: হাইকোর্টের (Calcutta High Court) রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। SSC-র পুরো প্যানেল বাতিল করল দেশের শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। নির্দেশ দেওয়া হল, 'যাঁদের চাকরি বাতিল হল, তাঁদের বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে।'
পুরো প্যানেল বাতিল: বাতিল হয়ে গেল ২০১৬ সালের SSC-র পুরো প্যানেল। বাতিল হল ২৫,৭৫২ জনের চাকরি। চাকরি থাকল একমাত্র ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসের। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানান, "নিয়োগে ব্যাপক পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। যা মেরামত করার কোনও সুযোগ নেই। যেভাবে নিয়োগ হয়েছে তাতে গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।'' হাইকোর্টের নির্দেশে কিছুটা সংশোধন করেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, যাঁদের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও ছাড় নেই। অবৈধ শিক্ষকদের বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন ওঠে আবার নতুন করে বয়সে উচ্চমানে ছাড় দিয়ে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সেটা তাঁরা পাবেন। যাঁরা অন্য সরকারি দফতর থেকে এখানে এসেছিলেন, তাঁরা পুরানো জায়গায় যোগদান করতে পারবেন। ৩ মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে তাঁদের চার বছরের বেতন ফেরত দিতে হবে না। রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৪-এর ২২ এপ্রিল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। ফলে চাকরি যায় ২৫ হাজার ৭৫২ জনের। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন এবং যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ১২ শতাংশ সুদ-সহ বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে, ওই বছরই ২৪ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার, SSC এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় চাকরিহারাদের একাংশও। সেই মামলায়, ২০২৪-এর ৭ মে, সুপ্রিমকোর্ট জানিয়ে দেয়, আপাতত ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের মধ্য়ে কারও চাকরি যাচ্ছে না। কাউকে সুদ-সহ বেতন ফেরাতেও হচ্ছে না। এরপরই গত ১০ ফেব্রুয়ারি, শীর্ষ আদালতে শেষ হয় এই মামলার শুনানি। অবশেষে রায় ঘোষণা করল শীর্ষ আদালত।
এবিষয়ে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "প্রক্রিয়াটা হল দুর্নীতিমূলক। কেউ কেউ যোগ্য হলেও অজান্তেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় থাকা উচিত। সেটা যদি না থাকে, তাহলে এভাবে বাছাই করা যায় না কে দুর্নীতি করেছে কে করেনি। স্বচ্ছতার একমাত্র পদ্ধতি হল নতুন করে আবার প্রক্রিয়া চালু করো। সেখানে যাতে দুর্নীতি না হয় নিশ্চিত করো। তাতে নিসন্দেহে যোগ্যরা উঠে আসবে।''