সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রায়ের পরও ছাত্রদের কথা ভেবে স্কুলে আসছিলেন তাঁরা। রিষড়া বিদ্যাপীঠ ইউনিট টু হিন্দি মাধ্যম স্কুলের ১৯ জন শিক্ষকের মধ্যে ১২ জন চাকরি হারিয়েছেন। শীর্ষ আদালতেরে রায়ের পরও চার জন আসছিলেন স্কুলে। গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধের এদিন স্কুলে ফিরলেন আরও আটজন চাকরিহারা। 

চাকরি হারিয়েও স্কুলে: রিষড়া বিদ্যাপীঠ ইউনিট টু হিন্দি মাধ্যম স্কুলের ১৯ জন শিক্ষকের মধ্যে ১২ জন চাকরি হারিয়েছেন। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ২৫০০ জন। পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রোশন কুমার মাল। যদিও এই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকা মুখ্যমন্ত্রী বলার আগে থেকেই স্কুলে আসছিলেন পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করে। আজ চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে আসেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক রোশন কুমার মাল। যদিও কাজে যোগ দেওয়া নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা।

চাকরিহারা শিক্ষক সৌরভ কুমার বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশের আগে থেকেই আমরা স্কুলে আসছিলাম। আবেদন, আমাদের মাইনে যেন বন্ধ না হয়। মাইনে বন্ধ হলে আমরা কীভাবে সংসার চালাব। আমরা যে সম্মানের চাকরি করতাম সেই সম্মানে আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যে দোষ করেছে তাকে শাস্তি দেওয়া হোক। যারা নির্দোষ তারা পরীক্ষা দিয়ে সঠিকভাবে পড়াশোনা করে ছ বছর ধরে চাকরি করছে, তাদেরকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া এটা সত্যি আমরা মেনে নিতে পারছি না । যদি মুখ্যমন্ত্রী ভলেন্টিয়ারি সার্ভিসের কথা বলেছেন যেটাকে আমরা গ্রহণ করতে পারছি না। সবার কাছে আমাদের অনুরোধ তারা আমাদের পথ দেখান।'' অপর এক চাকরিহারা শিক্ষক দেবদত্তা বৈদ্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন সেটা আমাদের কাছে একটা পজেটিভ নিউজ। উনি আছেন এটা শুনে আমাদের ভালো লেগেছে। আমি ছাত্রদের ভালোবেসে পড়াতে আসছি। মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা করেই আবার পড়াতে আসছি বলে মন্তব্য শিক্ষক কুণাল মণ্ডলের।

গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল বাতিল হয়ে যায়। চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী। চাকরিহারারা স্কুলে না আসায় অনেক স্কুলে শিক্ষকের অভাবে সমস্যা তৈরি হয়েছে। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারা শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাতত চাকরিহারা শিক্ষকদের ভলেন্টিয়ারি সার্ভিস দিতে অনুরোধ করেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রোসন কুমার মাল বলেন, গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে আমার স্কুলের শিক্ষকরাও উপস্থিত ছিলেন। আজ ৮ জন এসেছেন স্কুলে।বাকি চারজন তারা মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের খাতা জমার জন্য গেছেন। যদিও বোর্ডের তরফ থেকে এখনো কোন লিখিত নির্দেশিকা আসেনি, শুধুমাত্র ছাত্রদের ভালোবেসেই শিক্ষক শিক্ষিকারা আসছেন। দল মত নির্বিশেষে সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে এবং শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে আমার একটাই অনুরোধ স্কুলগুলিকে বাঁচান।।।