কলকাতা: SSC মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের নির্দেশ দেখে হতাশ চাকরিহারারা। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে ৭ এপ্রিল, নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলোর কী হল? নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভা থেকে রিভিউ পিটিশনেরও আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। তবে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ আদালতে দাঁড়িয়ে রায় মেনে নেয় রাজ্য সরকার। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিহারারা।
৩১ ডিসেম্বরের মধ্য়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। SSC মামলায় নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট অর্থাৎ চাকরি বাঁচল না। শুধু চাকরি যাওয়ার দিন কিছুটা পিছোল। তাও অযোগ্য় বলে চিহ্নিত হননি, শুধু এমন শিক্ষকদের। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ সামনে আসার পর, হতাশ চাকরিহারারা। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে ৭ এপ্রিল, নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যে প্রতিশ্রুতি দিলেন, তার কী হল? মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, "যারা যোগ্য তাদের চাকরি নিশ্চিন্ত করার দায়িত্ব সরকারের।'' ৩ এপ্রিল চাকরি বাতিলের রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ৭ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্য়মন্ত্রী রিভিউ পিটিশনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, "রাজ্য় সরকার রিভিউ পিটিশন করবে।'' অথচ, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের মূল রায়ে আংশিক পরিবর্তন মেনে নিলেন রাজ্য় সরকারের আইনজীবী। চাকরিহারাদের জন্য় তাঁর একাধিক পরিকল্পনা তৈরি বলেও নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আসার পর, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিহারারা। এক চাকরিহারা বলেন, "এই যে খেলা। মুখ্যমন্ত্রী সভায় বললেন যে আমি রায় রিভিউ করব, যোগ্যদের চাকরি বাঁচাব। আবার নেতাজি ইন্ডোরে ললিপপ দিলেন ভলান্টারি সার্ভিস। আবার তাঁরা এখানে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বলল একটা সাময়িক ললিপপ দেওয়া হোক। এটায় হতাশা বাড়ল, কোনও যোগ্যর মুখে দেখবেন হাসি নেই।''
সুপ্রিম কোর্টের এদিনের নির্দেশের পর রাজ্য় সরকার আবার নতুন করে চাকরিহারাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "মহামান্য় আদালত যা রায় দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী, আমার মনে হয়, আপনাদের এখন পড়ুয়াদের কথা ভাবা উচিত। আপনাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে, আমি যেমন আগেও বলেছিলাম, যে আপনাদের কাজে আপনাদের ফেরত যাওয়া উচিত।'' এবিষয়ে আন্দোলনকারী চাকরিহারা মেহবুব মণ্ডল বলেন, "আমি যে সটুডেন্টকে পড়াতাম, তাকে আমি ভালবাসতাম-স্নেহ করতাম, আমি তাকে আর দেখতে পারব না ৩১ ডিসেম্বর পর। এটা যখন আমি প্রতিদিন অনুভব করব ওই ৩১ ডিসেম্বর যাওয়া পর্যন্ত, এগুলো আমাদের কাছে এক একটা মৃত্যুর দিন, মৃত্যুর সমতুল্য।''