কলকাতা: ৭৫ জনের কাছ থেকে চাকরি বিক্রির টাকা নিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ, দাবি ইডির নথিতে। কাদের কাছে চাকরি বিক্রি জীবনকৃষ্ণ সাহার, চিহ্নিত ৭৫ জন, দাবি ইডির। আদালতে জমা দেওয়া নথিতে উল্লেখ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।
চাকরি পাইয়ে দিতে ৭৫ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ, দাবি ইডির নথিতে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, অনুমান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের। ED সূত্রে দাবি করা হয়েছে,'কখনও নগদে, কখনও টাকা জমা পড়েছে অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারের মাধ্যমে। টাকা জমা পড়েছে জীবনকৃষ্ণ সাহা ও তাঁর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে। টাকার উৎস সম্পর্কে সদুত্তর দিতে পারেননি জীবনকৃষ্ণ।
ভাইরাল ভিডিওয় দেখা গেছিল ধৃত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের কাছে টাকা ফেরত চাইছেন একজন! সেই ভিডিও নিয়েই দু'রকম মন্তব্য করেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। আদালতে ঢোকার সময় বলেন ভিডিও পুরনো, বাজে ভিডিও। আবার আদালত থেকে বেরনোর পর দাবি করলেন ওই ভিডিও ঠিক নয়। আদালতে ছেলেকে দেখে জড়িয়ে ধরেন ধৃত তৃণমূল বিধায়ক। পরে হাউ হাউ করে কাঁদতেও দেখা যায় তাঁকে। ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, CBI-এর পর ED-র হাতে দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হয়েছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। শনিবার তাঁকে ফের জেলে পাঠাল আদালত।
কিন্তু এরই মধ্য়েই প্রকাশ্যে আসে এই ভাইরাল ভিডিও। যেখানে ধৃত তৃণমূল বিধায়কের কাছে একজনকে বারবার টাকা ফেরতের আর্জি জানাতে দেখা যায়। এদিন আদালতে ঢোকার সময় এই ভিডিওকে পুরনো বলে দাবি করলেও, আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ভিডিওর সত্যতা সপাটে খারিজ করে দিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু ভাইরাল হওয়া ভিডিও নতুন না পুরনো, সেটা বিষয় নয়। প্রশ্নটা হচ্ছে, স্কুলে চাকরি দেওয়ার নামে জীবনকৃষ্ণ সাহা টাকা নিয়েছেন কি নেননি?
ED-র অফিসারদের দেখে পালানোর চেষ্টা থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ককে গ্রেফতারি ঘিরে চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সোমবার! শনিবার ইডি হেফাজতের শেষে আদালতে তোলার দিনও তৈরি হয়েছিল চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি! প্রথমে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আনা হয়েছিল তৃণমূল বিধায়ককে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁকে নগর দায়রা আদালতে ইডির বিশেষ কোর্টে তোলা হয়েছিল। সূত্রের খবর, আদালত কক্ষে একেবারে সামনের বেঞ্চেই বসেছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহার স্ত্রী টগর সাহা এবং তাঁদের ছেলে। ছেলেকে দেখতে পেয়ে তার দিকে এগিয়ে যান তৃণমূল বিধায়ক। আদর করেন। তারপর কাঠগড়ায় উঠে দেওয়ালের দিকে ঘুরে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা।