সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন একদিন আগেই। এ বার হুগলির তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Santanu Banerjee) নিয়ে বিস্ফোরক দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (Enforcement Directorate)। তাদের দাবি, মাথাপিছু চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ৪-৫ লক্ষ টাকা নিতেন শান্তনু। মানিক ভট্টাচার্যের কাছে সরাসরি চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সুপারিশ করতেন তিনি (SSC Case)। 


২০ জনের চাকরি করে দিয়েছিলেন শান্তনু! দাবি ইডি-সূত্রে


ইডি-র দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি করে দিতে সরাসরি মানিকের কাছে সুপারিশ করতেন শান্তনু। প্রত্যেক চাকরিপ্রার্থী পিছু ৪-৫ লক্ষ টাকা করে নিতেন তিনি। যে ৩১২ জন চাকরিপ্রার্থীর তালিকা পাওয়া গিয়েছিল শান্তনুর বাড়ি থেকে, তার মধ্যে ২০ জনের চাকরি করে দিয়েছিলেন। ওই ২০ জবন চাকরিপ্রার্থী সম্পর্কে বিশদ তথ্য মিলেছে বলে দাবি ইডি সূত্রের।


চাকরিপ্রার্থীদের চাকরির জন্য সরাসরি মানিক ভট্টাচার্যর কাছে সুপারিশ করতেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করল ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে দাবি, চাকরিপ্রার্থী পিছু চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছেন শান্তনু। তাঁর বাড়ি থেকে মোট ৩১২ জন চাকরিপ্রার্থীর তালিকা পেয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। উদ্ধার হয়েছিল তাঁদেরর সুপারিশপত্র এবং অ্যাডমিট কার্ড।


আরও পড়ুন: SSC Case: গ্রুপ সি-তে ৫৭ জনের চাকরি বাতিল, বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্কুল সার্ভিস কমিশনের


ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ৩১২ জনের তালিকা শান্তনুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়, তার একটি প্রতিলিপি মিলেছে মানিকের বাড়িতেও। শুধু তাই নয়, শান্তনুর পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও চাকার লেনদেন হয়েছে বলে দাবি ইডি-র। কিছু টাকা শান্তনু নগদে এবং কিছু টাকা পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে শান্তনু গ্রহণ করেছিলেন বলে দাবি।


শারীরিক পরীক্ষার পর শান্তনুকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হবে


যে ২০ জনকে শান্তনু চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে মনে করছে ইডি, আগামী সপ্তাহে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁদের। শনিবার সিজিও কমপ্লেক্স থেকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে শান্তনুকে। তার পর তোলা হবে ব্য়াঙ্কশাল কোর্টে। শান্তনুকে হেফাজতে রাখতে আর্জি জানানো হবে। ইডি-র অভিযোগ, তদন্তে অসহযোগিতা করছেন শান্তনু। তদন্তকে বিভ্রান্ত করছেন তিনি।


ইডি সূত্রে দাবি, কুন্তল ঘোষ শান্তনুকে নগদে ধাপে ধাপে ৭০-৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কুন্তলের টাকা দেওয়া কথা শান্তনু। ২০টি সম্পত্তি ও পরিবার হদিশ। সম্পত্তি কেনার টাকা উৎস কী, তা নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি । তবে কুন্তলের দেওয়া টাকাতেই সম্পত্তি কেনা হয় বলে অনুমান ইডি-র।  নিয়োগ দুর্নীতির এই মামলায় শান্তনুর নাম প্রথমবার উঠে এসেছিল মানিক ভট্টাচার্যর ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের মুখে। সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে, এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে শান্তনর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন তাপস মণ্ডল। বলেছিলেন, "চাকরি প্রার্থীরা আমায় বলে কুন্তল চাকরি করে দেবে, আমার তখন সন্দেহ হয়, আমি কুন্তলকে বলি কী করে করে দেবে, সে বলে আমার লোক আছে, যে কালীঘাটের সরাসরি কানেকশন আছে। নাম কে? শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। পোস্ট কী...পোস্টও বলেছিল। আপনি এই কথা সিবিআই-কে বলেছেন, তাপস বলছে, হ্যাঁ বলেছি। কার কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হবে, সেটাও শান্তনু বলে দিয়েছিল।"