আবীর দত্ত, কলকাতা: হাইকোর্টের (Highcourt) নির্দেশের পরেই গভীর রাতে এসএসসি (SSC) অফিস ঘিরে ফেলল সিআরপিএফ। রাত ২টো ৫০-এ আচার্য সদনের সামনে পৌঁছয় সিআরপিএফের (CRPF) ২টি ভ্যান। এসএসসি অফিসের দুটি গেটই বন্ধ থাকায় গেট টপকে ভিতরে ঢোকেন সিআরপিএফ আধিকারিক-সহ জওয়ানরা। গেটের বাইরেও মোতায়েন করা হয় কয়েকজন সিআরপিএফ জওয়ানকে। 


এরপর ভিতরে মোতায়েন রাজ্য পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিআরপিএফ আধিকারিকরা। প্রায় আধঘন্টা পরে খুলে দেওয়া হয় গেট। এসএসসি অফিসের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় সিআরপিএফ। এসএসসি অফিসের ভিতরে থাকা পুলিশ কর্মীদের বাইরে বেরোতে দেওয়া হয়নি। 


SSC-মামলায় গভীর রাতে নাটকীয় মোড়! চেয়ারম্যানের পদত্যাগের পর, তথ্যপ্রমাণ বিকৃতির অভিযোগ জানিয়ে, ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা। তাদের বক্তব্য শুনে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রাত থেকেই এসএসসি দফতরকে সিআরপিএফ নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলার নির্দেশ দেন। দফতরের সিসিটিভি ফুটেজও আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন তিনি।



SSC’র নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় প্রায় মধ্যরাত অবধি কলকাতা হাইকোর্টে বেনজির শুনানি। মামলাকারীদের তরফে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ শুনে একের পর এক কড়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ‘বুধবার রাত সাড়ে বারোটা থেকে, CRPF’-এর নিরাপত্তায় মোড়া থাকবে SSC দফতর। 


আরও পড়ুন, 'ধমকালেই অ্যারেস্ট করিয়ে দেব, আর কত খাবে'? হুঁশিয়ারি ক্ষুদ্ধ মমতার


‘বৃহস্পতিবার SSC দফতরের CCTV ফুটেজ জমা দিতে হবে কলকাতা হাইকোর্টে’। SSC’র নিয়োগ দুর্নীতির মামলায়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়, বুধবার বহাল রাখে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। 


প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে এসএসসি’র উপদেষ্টাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। এর মধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন সিদ্ধার্থ মজুমদার। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান পদ থেকে সিদ্ধার্থ মজুমদারের ইস্তফার পর SSC’র দফতরে গেছিলেন ৫ উপদেষ্টার সহযোগীরা। 


সেখানে তথ্য বিকৃত কিংবা নষ্ট করা হয়ে থাকতে পারে বলেও অভিযোগ করেন মামলাকারীরা। রাত পৌনে দশটায় বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা। শুনানি শুরুর জন্য প্রধান বিচারপতির অনুমতি নিতে বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অনুমতি মিললে রাত এগারোটায় চেম্বারে শুনানি শুরু করেন তিনি। 


মামলাকারীদের বক্তব্য শুনে, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, রাত সাড়ে বারোটা থেকে আচার্য সদনে SSC দফতরের দখল নেবে CRPF। বৃহস্পতিবার দুপুর একটা অবধি, কর্মী কিংবা অফিসার কেউ SSC’র অফিসে ঢুকতে পারবেন না। বুধবার চেয়ারম্যানের পদত্যাগের পর কারা কারা SSC’র দফতরে ঢুকেছেন সেই সিসিটিভি ফুটেজ বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার মধ্যে হাইকোর্টে জমা দিতে হবে। 


হাইকোর্টের নির্দেশের পর, রাতেই SSC দফতর মুড়ে ফেলা হয় সিআরপিএফ নিরাপত্তায়। সব মিলিয়ে এসএসসি মামলায় দিনভর নয়, কার্যত রাতভরও তোলপাড় রাজ্য।