সৌভিক মজুমদার, কমলকৃষ্ণ দে, কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাটকীয় মোড় (SSC Recruitment Case)। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) বিরুদ্ধে যেন সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ না দেওয়া হয়, এই আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি সুব্রত তালুকদারকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে একটি চিঠি। চিঠিটি প্রকাশ্যে এনে পুরোটাই চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, যাঁর নামে লেখা হয়েছে চিঠি, তাঁর দাবি তিনি এর কিছুই জানেন না।
সিবিআই তদন্ত যাতে দেওয়া না হয়, তার জন্য বিচারপতিকে চিঠি
একটা চিঠি। তার সূত্র ধরে ফের শিরোনামে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি বিতর্ক। ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যেন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ না দেওয়া হয়,’ বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিঠিতে এমনই আর্জি জানানো হয়েছে।
মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর দাবি, মঙ্গলবার বাড়িতে রেজিস্টার্ড পোস্টে তিনি এই চিঠির প্রতিলিপি পেয়েছেন। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সিবিআই হাজিরার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদারকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে চিঠি।
চিঠিতে পত্রলেখকের জায়গায় নাম রয়েছে তাপস সামন্তের। চিঠিতে লেখা হয়েছে, "আমি তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত এবং অতিরিক্ত সরকারি আইনজীবী। পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলের মহাসচিব এবং রাজ্যের মন্ত্রী। মাননীয় বিচারপতির কাছে অনুরোধ, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় কোনও ভাবেই যেন তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত না দেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে চিঠিতে আর্জি জানানো হয়েছে যে, সিবিআই দফতরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাজিরার নির্দেশে স্থগিতাদেশের মেয়াদ ১২ সপ্তাহ বাড়িয়ে দেওয়া হোক। চিঠিতে পত্রলেখকের তরফে দাবি করা হয়েছে, মামলাকারীপক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তিনিও এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্ত না চাইবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
চিঠির পিছনে চক্রান্ত দেখছেন মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন। তিনি বলেন, "এটা পরিকল্পিত চক্রান্ত। যাতে শুনানি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে না হয় এবং তিনি যাতে মামলা থেকে সরে দাঁড়ান তার জন্য এই চক্রান্ত।"
যাঁর নামে চিঠি, তিনি কিছুই জানেন না!
চিঠিতে লেখা ফোন নম্বরের সূত্র ধরে, তাপস সামন্তর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, জানা যায় তিনি বর্ধমান আদালতের পকসো কোর্টের বিশেষ সরকারি আইনজীবী। তাঁর দাবি, চিঠির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। এবিপি আনন্দকে ফোনে তিনি বলেন, "আমি গোটাটাই অন্ধকারে। অভিসন্ধিমূলক। আমার বয়স ৭৩ প্লাস। বাড়ি আর কোর্ট করি। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাইছি।"
তাতেই প্রশ্ন উঠছে, চিঠি তাহলে লিখল কে? চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, এর প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেও। তবে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এই চিঠি পেয়েছেন কি না, সেবিষয়ে কিছু জানা যায়নি।