কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) ২৫ হাজার ৭৫৩জনের চাকরি বাতিল করেছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বলাইবাহুল্য লোকসভা ভোটের মধ্যেই বড় ধাক্কা রাজ্যের। কীভাবে চাকরি চুরি? 'গোপন' টেন্ডার-OMR নষ্ট-প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণের পরেও কাউন্সেলিং-সহ হাইকোর্টের রায়ে ১৭ পন্থার পর্দাফাঁস করা হয়েছে।
১) 'গোপন' টেন্ডার : সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ নম্বর ধারা অমান্য় করে, 'গোপন' টেন্ডারে OMR মূল্য়ায়নকারী সংস্থা NYSA-কে বেছে নেয় SSC
২) নিয়োগে প্রশ্ন : NYSA-র তরফে OMR স্ক্য়ানের জন্য় নিয়োগ করা হয় 'ডেটা স্ক্য়ানটেক' নামক সংস্থাকে
৩) নিয়োগ-অস্বীকার: OMR স্ক্য়ান করা হত SSC-র অফিসে। অথচ, 'ডেটা স্ক্য়ানটেক'-কে নিয়োগ করার কথা অস্বীকার করে SSC
৪) OMR নষ্ট : আসল OMR শিট নষ্ট করে ফেলে দেয় SSC ।
৫) OMR নিরুদ্দেশ : তদন্তে নেমে SSC-র সার্ভারে কোনও OMR-এর স্ক্য়ান খুঁজে পায়নি CBI
৬) প্রমাণ লোপাট : সার্ভারে OMR-এর স্ক্য়ান করা ছবি না রেখেই, আসল OMR নষ্ট করে ফেলে SSC
৭ ) OMR-এ ভুয়ো দাবি: ২০১৮ থেকে ২০২৩ অবধি, RTI আবেদনকারীদের OMR-এর স্ক্য়ান কপি দিয়ে, SSC দাবি করত, এগুলি তাদের ডেটাবেসে ছিল। কিন্তু, SSC-র সার্ভারে এরকম কোনও OMR খুঁজেই পায়নি CBI
৮) পদ কম, নিয়োগ বেশি: ৪টি ক্য়াটেগরিতেই ঘোষিত শূন্য়পদের থেকে বেশি সংখ্য়ক প্রার্থী নিয়োগ করে SSC
9) নাম নেই, চাকরি আছে: প্য়ানেলে নামই নেই, এমন প্রার্থীদের নিয়োগ করে SSC
১০) সাদা খাতায় চাকরি: খালি OMR অর্থাৎ সাদা খাতা জমা দিয়েও মিলেছে চাকরি
১১) 'এক্সপায়ার্ড' চাকরি: প্য়ানেলের মেয়াদ শেষ যাওয়ার পরও, সেখান থেকে চাকরি দেয় SSC
১২ ) তালিকায় শেষে, চাকরি শুরুতে: মেধাতালিকার প্রথমে থাকা প্রার্থীদের বদলে, অগ্রাধিকার দেওয়া হয় শেষের দিকে থাকা প্রার্থীদের।
১৩ ) মেধাতালিকায় নম্বর গোপন: 'কুকীর্তি' লুকোতে প্রার্থীদের নম্বর-সহ মেধাতালিকা কখনও প্রকাশই করেনি SSC
১৪ ) বেআইনি কাউন্সেলিং : প্য়ানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও প্রার্থীদের কাউন্সেলিং করে SSC
১৫ ) দুর্নীতি খুঁজতে অসহযোগিতা: দুর্নীতির সমস্ত সুবিধাভোগীকে এখনও চিহ্নিত করা বাকি। SSC, বোর্ড এবং রাজ্য় সরকারের অবস্থানের জন্য় তা করা যাচ্ছে না।
১৬ ) চুরি ঢাকতে বাড়তি পদ: অযোগ্য় প্রার্থীদের চাকরির সুযোগ করে দিতে, অতিরিক্ত শূন্য়পদ তৈরির আবেদন জানায় SSC
১৭ ) সর্বত্রই বিধি ভঙ্গ: চারটি ক্য়াটেগরির ক্ষেত্রেই, কখনও নিয়োগের কোনও বিধি মানা হয়নি।
আরও পড়ুন, 'অযোগ্যদের কথা ভেবেই রায়..', চাকরি হারালেন এবার অনামিকাও
উল্লেখ্য, আজ ২৫ হাজার ৭৫৩জনের চাকরি বাতিল করেছে হাইকোর্ট । '২০১৬-র সমস্ত নিয়োগই অবৈধ', নির্দেশ বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের । ২০১৬-র সমস্ত নিয়োগ বাতিল করেছে হাইকোর্ট। মেয়াদ উত্তীর্ণদের ৪ সপ্তাহের মধ্য়ে বেতন ফেরতের নির্দেশ। ৬ সপ্তাহের মধ্যে জেলা শাসকদের টাকা উদ্ধারের নির্দেশ। সমস্ত নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করবে সিবিআই। যাকে প্রয়োজন, তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই।