কলকাতা: ভোটের মধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে বড় ধাক্কা রাজ্যের। ২৫ হাজার ৭৫৩জনের চাকরি বাতিল করল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। '২০১৬-র সমস্ত নিয়োগই অবৈধ', নির্দেশ বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের। আর এবার পরেশ কন্যা ও ববিতা সরকারের জায়গায় চাকরি পেয়েও হারালেন অনামিকা রায়ও (Anamika Roy)।  


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাকরি গিয়েছিল মন্ত্রী কন্যার


সাল ২০২২। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, তখন পার্থ-সহ শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েটরা বিদ্ধ। সেসময় হাইকোর্টের নির্দেশে (Calcutta High Court) রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর (Paresh Adhikari) কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি গিয়েছিল(Ankita Adhikari)। বাবার ক্ষমতা খাটিয়ে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পরেশ কন্যার বিরুদ্ধে। কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সেসময় অঙ্কিতাকে যাবতীয় বেতন ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর অঙ্কিতার চাকরি যাওয়ার পর, আদালতের নির্দেশে সেই চাকরি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল ববিতা সরকারকে। এবং পরেশ কন্যার বেতনও পেয়েছিলেন ববিতা। কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি বিষয়টি। 


 দীর্ঘ লড়াই শেষে পরেশ কন্যার চাকরি পেয়েও, শেষ অবধি চাকরি হারান ববিতাও


মূলত, প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর তৃণমূলে যোগদানের পরে, তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা চাকরি পান কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেন ববিতা সরকার নামে এক চাকরিপ্রার্থী। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি যায় পরেশ-কন্যার। মেখলিগঞ্জের স্কুলেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন মামলাকারী ববিতা। ঐতিহাসিক রায়ের পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু কমিশনের নম্বর-বিভ্রাটের জেরে ববিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত।


ববিতার সেই চাকরি পায় অনামিকা


হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন, মেধা তালিকায় নাম থাকা, পরবর্তী দাবিদার, অনামিকা রায়। কাউন্সেলিংয়ের পরে, হাইকোর্ট অনামিকা রায়কে সুপারিশ পত্র দেওয়ার জন্য় নির্দেশ দেয়। কিন্তু, তারপরেও সমস্যা। ৪ মাসেও, অনামিকার পুলিশ ভেরিফিকেশন না হওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।ডিরোজিও ভবন থেকে শিক্ষিকার নিয়োগপত্র হাতে পান অনামিকা। নতুন চাকরিতে যোগ দেন অনামিকা রায়। কিন্তু এবারও তা দীর্ঘতর হল না। অঙ্কিতা হয়ে ববিতা হয়ে পাওয়া চাকরি হারালেন এবার অনামিকাও।


আরও পড়ুন, ২০১৬ র পরীক্ষার্থী, এখন বয়সসীমা পেরিয়েছে? আর কি চাকরি হবে? জানিয়ে দিলেন আইনজীবী


যোগ্য প্রার্থীদের কথা ভাবা হল না : অনামিকা 


অনামিকা রায় বলেন, অনেকদিন থেকেই আদালতে মামলাটা চলছিল। আজকে অর্ডার হবে সেটা জানতাম।এটা আমি সবসময় ভেবেছি, যোগ্যদের কোনও সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে না, এরমকই একটা রায় দেবে আদালত। বিচার ব্যবস্থার প্রতি তো আমার অবশ্যই ভরসা আছে। কিন্তু এই রায়টা দেখার পর আমি ভাবছি যে, তাহলে কি বিচার ব্যবস্থার প্রতি যে আস্থাটা ছিল সেটা কি ভুল ? কারণ এইরকম একটা রায় কখনও আশা করিনি। যোগ্য প্রার্থীদের কথা কিন্তু কোনওভাবেই ভাবা হল না। শুধুমাত্র অযোগ্যদের কথা ভেবেই রায় দেওয়া হয়েছে। কোনওরকম গুরুত্ব এখানে তাহলে থাকল না। 



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।