কলকাতা : একসময়ে এই মামলায় তাঁর একের পর এক পর্যবেক্ষণ তুমুল আলোচনা-আলোড়ন তৈরি করেছিল। SSC-দুর্নীতি মামলায় যিনি একের পর এক সাড়া ফেলে দেওয়া রায় দিয়েছিলেন। সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এখন বিচারব্যবস্থা থেকে বহু দূরে। রাজনীতির ময়দানে। বিজেপির টিকিটে তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ছেন। তিনি এখন বিজেপির হয়ে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত। আজ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার পর স্বাভাবিকভাবেই উঠে এল প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি চলাকালীন কেউ কেউ তাঁর নাম নিয়ে চেঁচামিচি শুরু করে দেন বলে এদিন জানান আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, "একদল লোক খুব চেঁচাচ্ছিলেন, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলে। তখনই বললেন (বিচারপতি) যে এটা রাজনীতির জায়গা নয়।"
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam Case) কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) একাধিক নির্দেশের উপর এদিন স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। যার জেরে এখনই চাকরি যাচ্ছে না ২০১৬-র এসএসসির ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। ১৬ জুলাই পর্যন্ত যোগ্য-অযোগ্য সবার চাকরি বহাল থাকছে। আগামী ১৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের জেরে আপাতত স্বস্তিতে রাজ্য সরকার ও চাকরিহারারা। তবে, অযোগ্য প্রমাণিত হলে কী পদক্ষেপ তা স্পষ্ট করে দেয় শীর্ষ আদালত। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শূন্যপদ ইস্যুতে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না বললেও শীর্ষ আদালত সিবিআই তদন্ত বহাল রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে জুলাই মাস পর্যন্ত ঝুলে রইল প্রকৃত যোগ্যদের ভাগ্য।
এপ্রসঙ্গে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "পরবর্তী শুনানি ১৬ জুলাই রেখেছে। ওইদিন পর্যন্ত আপাতত কারো চাকরি যাচ্ছে না। তাঁদের টাকা-পয়সা ফেরতের একটা আন্ডার-টেকিং দিতে হবে। সিবিআই তদন্ত চলবে । তার ওপর কোনও স্থগিতাদেশ নেই।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা পরিষ্কার বলেছি, যদি কেউ দেখাতে পারেন ঠিকভাবে তাঁর নিয়োগ হয়েছে। নিয়োগের পেছনে কোনও দুর্নীতি নেই, তাহলে তাঁর চাকরি যাবে কেন ? চাকরি থাক। আমাদের তো কোনও আপত্তি নেই। আমরা চাইছি, স্বচ্ছভাবে নিয়োগ। এখন এই স্বচ্ছতা নিয়েই শুনানি হচ্ছে। অনেক আইনি জটিলতা আছে। সেটা নিয়ে ১৬ তারিখে শুনানি হবে। আরও মুশকিল হল, সকলে মিলে এমন হইচই করছে এখানে, এটা অদ্ভুত ব্যাপার। যার ফলে বিচারপতিরাও খানিকটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। "
প্রসঙ্গত, SSC-দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়। তার প্রেক্ষিতে, মামলাগুলো কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠায় এবং বিশেষ বেঞ্চ গঠনের নির্দেশে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে টানা এই মামলার শুনানি হয়। পরে সেই বেঞ্চ SSC-দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়। তার প্রেক্ষিতে, মামলাগুলো কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠায় এবং বিশেষ বেঞ্চ গঠনের নির্দেশে দেয় সুপ্রিমকোর্ট। প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে টানা এই মামলার শুনানি হয়। দিনকয়েক আগে সেই মামলায় নির্দেশে হাইকোর্টের এই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল,২০১৬ সালে স্কুলে চাকরি পাওয়া ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের পুরো প্যানেল এখনই বাতিল করে দিতে হবে।