কলকাতা: জীবিকা বাঁচাতে জীবন বাজি! পেটে লাথি, পিঠে লাঠির পর ক্লাস রুম ছেড়ে রাস্তায় শিক্ষকরা। SSC ভবনের সামনে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অনশনে চাকরিহারারা। সকালের পর রাতেও গেলেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'অবস্থান হোক, বিক্ষোভ হোক, মিছিল হোক, স্লোগান হোক, কিন্তু অনশন যিনি করছেন, তাঁর শরীরটা খারাপ হয়ে যাবে। তাঁর শরীর খারাপ হয়ে গেলে তো কেউ দেখতে আসবে না সরকারের তরফ থেকে। তখন তাঁকে, তাঁর সংসারকে ভুগতে হবে। সুতরাং আমি আবার আবেদন করব যে, অনশনটা তুলে নেওয়ার জন্য।'
আরও পড়ুন, চাকরি বাতিলকাণ্ডে তোলপাড়, মহামিছিলের পর আজ SSC ভবন অভিযান
একদিকে চাকরি ফিরে পাওয়ার লড়াই, আর অন্যদিকে পুলিশের লাঠি, লাথি মারার প্রতিবাদ। বুধবার রাত থেকে এসএসসি ভবনের কাছে খোলা আকাশের নীচে বসে রয়েছেন চাকরিহারারা। এবার অনশনও শুরু করলেন তাঁরা। OMR-এর মিরর ইমেজ সরকার প্রকাশ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা। রাজনৈতিক দলকে এই আন্দোলন থেকে দূরে রাখতে, অবস্থানস্থলে পোস্টারও লাগিয়ে ফেলেছেন তাঁরা।
চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাস বলেন, 'আমরা এখানে অনশনের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।' শুধু চাকরি বাঁচানোর নয়, এই লড়াই মান বাঁচানোর,এই লড়াই প্রাণ বাঁচানোরও । আর এই জীবিকা বাঁচানোর লড়াইতে নেমে, এবার জীবন বাজি রাখতেও পিছপা হলেন না চাকরিহারারা। অনশন শুরু করলেন মালদার শলাইডাঙা হাইস্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক পঙ্কজ রায়। অনশনকারী শিক্ষক পঙ্কজ রায় বলেন, যেই পথটা আমি বাছতে বাধ্য হলাম, সেটা হল অনশন। এই একমাত্র পথ। যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদেরকে বাঁচানোর জন্য আমাদের কাছে আর কোনও রাস্তা নেই।
বুধবার রাত পেরিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল,সকাল গড়িয়ে বিকেল, বিকেল গড়িয়ে সন্ধে। এসএসসি অফিসের কাছে লাগাতার অবস্থানে বসে রয়েছেন চাকরিহারা। চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাস বলেন, রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন যোগ্যদের চাকরিটা বাঁচানোর স্বার্থে তারা ওএমআর শিট মিরর ইমেজ এবং যোগ্যদের নিখুঁত তালিকা প্রকাশ করুক। যতক্ষণ না প্রকাশ হবে, আমরা এখানে অনশনের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।' বুধবার রাতেই চাকরিহারাদের অবস্থানস্থলে যান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ফের সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ, ও এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল।