কলকাতা:  আপাতত দু’দিন উচ্চপ্রাথমিকে কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের নিয়োগপত্রে ‘না’ । বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগপত্র প্রদানে নিষেধ করল হাইকোর্ট। নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। অতিরিক্ত ৭৫০ শূন্যপদের নিয়োগপত্রে দুদিনের জন্য নিষেধ বিচারপতির। পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত পদক্ষেপ নয়, নির্দেশ বিচারপতির। আজ অফিস বন্ধ, ফলে নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রশ্ন নেই, জানাল এসএসসি। কীভাবে তৈরি হয়েছে ওয়েটিং লিস্ট? জানতে চাইল আদালত।


‘কমিশন জানে তারা স্বচ্ছ নয়। এমন শিক্ষক পাঠাচ্ছেন যার জন্য পড়ুয়াদের হেনস্থা হতে হচ্ছে’। কমিশনের উদ্দেশ্যে মন্তব্য বিচারপতির। ২০১৬-য় নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি, ২০১৭-য় পরীক্ষা। ২০১৮ সালে পার্সোনালিটি টেস্ট নেওয়া হয়। ১৪ অক্টোবর অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। ৩ নভেম্বর কাউন্সেলিংয়ের তারিখ জানায় এসএসসি। ১০ ও ১১ নভেম্বর ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের কাউন্সেলিং। ওয়েটিং লিস্টে নাম না থাকায় মামলা করেন  এক চাকরিপ্রার্থী। ৭২ পেয়ে ডাক না পেলেও ৫৬ পেয়েও অন্য একজনের কাউন্সেলিংয়ে ডাক পাওয়ার অভিযোগ তোলেন ওই মামলাকারী। তাঁর থেকে অন্তত আরও ৬০ জন কম নম্বর পেয়েছেন বলে অভিযোগ মামলাকারীর। এই ৬০ জনকে নিয়ে অবস্থান জানাবে কমিশন। মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার।


রাজ্যে আরও এক নিয়োগ পক্রিয়া নিয়ে উঠল প্রশ্ন! আর একবার প্রশ্নের মুখে নিয়োগে স্বচ্ছতা! সোমবার বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, ভুল কি ইচ্ছাকৃত না গাফিলতি? মঙ্গলবার একধাপ এগিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বললেন, স্কুল সার্ভিস কমিশন জানে, তারা স্বচ্ছ নয়। এরপরই উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষায় ৭৫০টি শূন্যপদে নিয়োগে আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আপাতত ২ দিনের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির আগে পর্যন্ত কোনও চাকরিপ্রার্থীকে সুপারিশপত্র দিতে পারবে না স্কুল সার্ভিস কমিশন।


এরইসঙ্গে ওয়েটিং লিস্ট কীভাবে তৈরি হয়েছিল? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। SSC সূত্রে খবর উচ্চ প্রাথমিকের কর্মশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং পর্ব শেষ হয়েছে। ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থী, যাঁরা কাউন্সেলিং-এ এসেছিলেন, তাঁদের নিয়োগের সুপারিশপত্রও দেওয়া হয়। এরপরই সোমা রায় নামে এক চাকরিপ্রার্থী মামলা করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর থেকে কম নম্বর পেয়ে অনেকে কাউন্সেলিংয়ে ডাক পেয়েছেন। সেই মামলায়, মঙ্গলবার এসএসসির জবাব চান বিচারপতি। তাতেই, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়, বীরসা মুণ্ডার জন্মদিন উপলক্ষ্যে এদিন (মঙ্গলবার) অফিস বন্ধ রয়েছে, ফলে নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রশ্নই নেই।


এরপরই, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু প্রশ্ন করেন, কীভাবে তৈরি হয়েছিল ওয়েটিং লিস্ট? কমিশন জানে তারা স্বচ্ছ নয়। এমন শিক্ষক পাঠাচ্ছেন যার জন্য পড়ুয়াদের হেনস্থা হতে হচ্ছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার তাঁরা আদালতে বিস্তারিত তথ্য দেবেন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের কথায়, স্থগিতাদেশ এই খবর আমাদের কাছে নেই কোনও। আমি নিজে তো স্কুলে উপস্থিত ছিলাম না। আইনজীবীর সঙ্গে যা কথা হয়েছে তাতে কোনও স্থগিতাদেশ আদালত দেয়নি। মামলা হয়েছে। আদালত আমাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান। বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। মেধাতালিকার ব্যাপারে আদালত একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা থেকে ২৩৫-৩০১ নম্বর, তাঁদের বিস্তারিত বিবরণ-সহ। আমরা আশাকরি আদালত সন্তুষ্ট হবে। কাউন্সেলিং হয়ে গেছে। এখানে স্থগিতাদেশের বিষয় নেই।


২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষায় নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। ২০১৭-য় পরীক্ষার পর ২০১৮ সালে পার্সোনালিটি টেস্ট নেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করার পাশাপাশি, ৩ নভেম্বর কাউন্সেলিংয়ের দিন ঘোষণা করে SSC। ১০ ও ১১ নভেম্বর ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের কাউন্সেলিং হয়। এরপরই, তালিকায় নাম না থাকায় সোমা রায় নামে এক চাকরিপ্রার্থী মামলা করেন। ৭২ নম্বর পেয়ে তিনি সুপারিশপত্র না পেলেও, ৫৬ নম্বর পেয়ে অন্য একজন সুপারিশপত্র পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। পাশাপাশি, চাকরি প্রার্থী সোমা রায়ের অভিযোগ, তাঁর থেকে অন্তত আরও ৬০ জন কম নম্বর পেয়েছেন। সেই ৬০ জন প্রসঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে অবস্থান স্পষ্ট করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার।