কমলকৃষ্ণ দে এবং সন্দীপ সমাদ্দার, বর্ধমান, পুরুলিয়া:  স্থায়ীকরণ, বেতনবৃদ্ধি সহ একাধিক দাবীতে বর্ধমান ডিপোতে চলছে কর্মবিরতি। আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC। SBSTC-র অস্থায়ী কর্মীদের দাবি, স্থায়ীকরণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা চলছে। মন্ত্রী ও সংস্থার চেয়ারম্যানের কাছে আর্জি জানিয়েও সুরাহা মেলেনি। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে, পর্যাপ্ত বাসের অভাব ও সময়ে না চলায় চূড়ান্ত হয়রানির শিকার যাত্রীরা। 


আন্দোলনরত অস্থায়ীকর্মীদের দাবী, সংস্থাকর্তৃক প্রদত্ত বেতনে সংসার চালানো সম্ভবপর হচ্ছে না। তার উপর স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে চলছে টালবাহানা। দীর্ঘদিন ধরে দফতরের মন্ত্রী, সংস্থার চেয়ারম্যানকে জানিয়েও কোনো সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। তবে তাঁদের তরফে স্থায়ী কর্মীরা যে বাস নিয়ে যাচ্ছেন তাতে কোনো বাধা দেওয়া হচ্ছে না।


অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার পুরুলিয়া ডিপোর অস্থায়ী কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি জারি।  সময়মতো বেতন ও মাসের ২৬ দিনের কাজ, সমকাজে সমবেতন, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ, গোটা রাজ্যে ৮৯ জন বরখাস্ত হওয়া কর্মীকে কাজে ফিরিয়ে নেওয়া, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, এছাড়াও জেলার সমস্ত রুটে পুনরায় বাস পরিষেবা চালু করতে হবে। এই দাবি গুলি নিয়ে আজ থেকে কর্ম বিরতির ডাক দিল দক্ষিণ বঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার আই এন টি টি ইউ সি এর অনুমোদিত অস্থায়ী কর্মী সংগঠন। আজ সকাল থেকে কোনো সরকারি বাস পথে নামেনি। ফলে সমস্যায় পড়েছে নিত্যযাত্রীরা।                          


আরও পড়ুন, দুর্গাপুজোর আগে সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর, মাস শেষের আগেই মিলবে বেতন


এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পুরুলিয়ার ডিপো  বিএসএস এবং ডিআরডব্লিউ কর্মীবৃন্দ। সেখানে বলা হয়েছে "২০২২ তারিখ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার পুরুলিয়া ডিপোর বিএসএস এবং ডিআরডব্লিউ চালক এবং পরিচালকরা কর্মবিরতি আন্দোলন শুরু করছে, এই কারণে সমস্ত বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিষেবা বন্ধ থাকবে"। আন্ত জেলা পরিষেবা এই মুহূর্তে পুরুলিয়া ডিপোর বাসের সংখ্যা ১২টি। গত দু মাস আগে এই ডিপো থেকে ৩০টি রুটে বাস চলাচল করত। দু মাসে তা ১২টি পরিষেবায় নেমে এসেছে। এই ডিপোতে অস্থায়ী ড্রাইভার ও কন্ডাক্টর সংখ্যা ৮৪ জন। এই ডিপো থেকে ৩০টি রুটে বাস চলাচল করার কথা যার মধ্যে জেলার মধ্যে ১০টি রুট, ও ২০টি দূরপাল্লার বাস অন্যান্য জেলায় চলাচল করে।


সরকারী বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছে জেলার যাত্রীরা। দূরপাল্লার বেসরকারি বাস যেমন মালদা,বহরমপুর, কলকাতা সেই অর্থে দিনের বেলায় চলাচল করে না। এক দিকে কুর্মি সমাজের অবরোধের জেরে গত তিনদিন ধরে রেল পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে পুরুলিয়ার যাত্রীরা।