কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: আজ পয়লা বৈশাখ (Subho Noboborsho)। ১৪৩১-কে বিদায় জানিয়ে বাংলা ক্যালেন্ডারে নতুন বছর ১৪৩২। রাজ ঐতিহ্য মেনে দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিয়েই বছর শুরু করেন বর্ধমানবাসী। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও হালখাতার পুজোয় মেতে উঠেন। নববর্ষ উপলক্ষে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভক্ত সমাবেশে ফলে তিল ধারণের জায়গা নেই।

বর্ধমানে অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা। মা সর্বমঙ্গলাকে রাঢ় বঙ্গের দেবী বলা হয়। যে কোনও শুভ কাজ শুরুর আগে মা সর্বমঙ্গলার মন্দিরে পুজো দেন বর্ধমানের বাসিন্দারা। তাই পয়লা বৈশাখ  উপলক্ষে সকাল থেকেই মন্দিরে ভক্তদের ঢল নামে। সারা বছর পরিবার পরিজনের মঙ্গল কামনায় মন্দিরে পুজো দেন ভক্তরা। সেজন্য ভোর থেকেই দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষায় থাকেন অগণিত ভক্ত। হাজারে হাজারে ব্যবসায়ী আসেন হালখাতা পুজো করার জন্য। মন্দিরের নাটমঞ্চে তিল ধারণের জায়গা নেই। লাল খাতার ওপর সিঁদুর দিয়ে আঁকা হয় স্বস্তিক চিহ্ন। সিঁদুর গুলে লাগিয়ে দেওয়া হয় এক টাকার কয়েন। আনা হয় লক্ষ্মী গণেশের মূর্তি। পুজো করিয়ে সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। এই রীতিই রাজ আমল থেকে চলে আসছে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সবারই প্রার্থনা মায়ের কাছে ব্যবসা বাণিজ্যে শ্রীবৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবার ও সকলের মঙ্গল যেন করেন মা সর্ব মঙ্গলা। বাড়তি ভিড় সামাল দিতে ও যে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয় স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশ।

এদিকে প্রার্থনা নিয়েই ভোর থেকে ভিড় উপচে পড়েছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। সকাল থেকেই পুজো দেওয়ার লম্বা লাইন পুণ্যার্থীদের। দক্ষিণেশ্বরেও হালখাতার পুজো করাতে ব্যবসায়ীরা ভিড় করেছেন। অন্যদিকে, নতুন বছরে নতুন রূপে কালীঘাট মন্দির। গ্রানাইট ও মার্বেলে মোড়া মন্দির চত্বর। দক্ষিণেশ্বরের ধাঁচে কালীঘাটে তৈরি হয়েছে রাজ্যের দীর্ঘতম স্কাইওয়াক। গতকাল এর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্কাইওয়াকে রয়েছে ২টি এস্কালেটর, ৩টি সিঁড়ি ও ৩টি লিফট। স্কাইওয়াকের একটি মুখ কালীঘাটের মূল মন্দিরের দিকে। অন্যদিকটি নেমেছে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের ওপর। আজ থেকেই চালু হয়েছে স্কাইওয়াক। নতুন করে তৈরি হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাঁচতলা হকার্স কর্নার। পয়লা বৈশাখে হালখাতা পুজোর জন্য কালীঘাটে ভিড় করেছেন ব্যবসায়ীরা।  লাল মলাট দেওয়া খাতার পুজো করে, প্রথম পাতায় স্বস্তিক এঁকে শুরু হয় নতুন বছরের খাতা লেখা। সারা বছরের জন্য মঙ্গল কামনায় দর্শনার্থীদেরও ঢল নেমেছে। সকাল সকাল পুজোর ডালি নিয়ে হাজির হয়েছেন পুণ্যার্থীরা।