প্রকাশ সিনহা, রাজীব চৌধুরী,  উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে একের পর এক তৃণমূল নেতার নাম। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর গ্রেফতার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যও। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরু পাচার মামলায়, একের পর এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার উপর নজর কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি । অবৈধভাবে স্কুলে নিয়োগ নিয়ে এক প্রভাবশালী নেতার আপ্ত সহায়কের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যর। তাঁর মোবাইল ফোন ঘেঁটে এই তথ্য মিলেছে বলে ED সূত্রে দাবি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে আরও দাবি, ২০ জন করে চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা পাঠিয়েছিলেন কয়েকজন বিধায়ক। এইসব তথ্য সামনে আসার পর থেকেই বিরোধীদের আক্রমণের মুখে শাসক দল।


কে RK? DD’ই বা কে? 
হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট ঘিরে কি ক্রমেই তদন্তকারীদের জালে জড়িয়ে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য?  তাঁর ওপর কি ইডি’র চাপ ক্রমেই বাড়ছে? মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সবার মুখে মুখে একটাই প্রশ্ন ঘুরছে তা হল, কে RK? DD’ই বা কে? হোয়াটস অ্যাপ চ্যাটে কাদের সঙ্গে কথা হত মানিক ভট্টাচার্যর?

এরইমধ্যে পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিকের মোবাইল ফোন ঘেঁটে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে বলে ED সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে দাবি, অবৈধভাবে স্কুলে নিয়োগ নিয়ে এক প্রভাবশালী নেতার আপ্ত সহায়কের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যর।

আপ্ত সহায়ক ও মানিকের কথোপকথন 
সেখানে ওই আপ্ত সহায়ক জানতে চেয়েছিলেন - লিস্টের কী হল? উত্তরে মানিক জানান - পাঠিয়ে দিয়েছি। তারপর পরপরই মানিক বলেছিলেন - কাল ফিরে দেখা করতে চাই।  অন্যদিক থেকে উত্তর আসে - দুপুর ২টোর পর ফোন করুন।
মানিক ভট্টাচার্যর বাড়ি থেকে একটি CD-ও বাজেয়াপ্ত করেছিল ED। সূত্রের দাবি, সেই CD-র মধ্যেই একটি চিঠি রয়েছে। যেখানে বিধায়কদের কাছ থেকে ২০ জন করে চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। অনেক বিধায়ক সেই অনুযায়ী নামের তালিকাও পাঠিয়েছেন বলে ED সূত্রে দাবি করা হয়েছে। এখন সেই সব বিধায়ককে কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়, তা জানতে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

সুজন, রাহুলের প্রতিক্রিয়া 
বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হা বলেন, ' শুধু আপ্ত সহায়ক নন, তৃণমূলের সবাই দুর্নীতি করেছে। মানিক ভট্টাচার্য চেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বাঁচবে। ওকে ধরলে সবাই ফাঁসবে। এই টাকা তো একা খায়নি। ওকে ধরছে মানে সবাই ফাঁসবে। চূড়ায় পৌঁছনো যাবে।' 


সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য,  সুজন চক্রবর্তী বলেন, ' ঘাটে ঘাটে টাকা গেছে, কালীঘাটে গেলে সব পাওয়া যাবে, এমন একটা সময় এসেছে, তৃণমূল নেতারা এবার রাস্তায় টাকা ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাবে। ' সব মিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে রাজ্য রাজনীতি সমানভাবে উত্তপ্ত।