শিবাশিস মৌলিক, আবীর দত্ত, সোমনাথ মিত্র, হুগলি :   পুলিশের সঙ্গে বচসা। ব্যারিকেড ধরে টানাটানি । পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি! হাওড়ার ( Howrah Violence ) পর, রিষড়া যাওয়ার পথেও, বিজেপির ( BJP ) রাজ্য সভাপতিকে পুলিশের বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় কোন্নগরে। এরপর ফের মঙ্গলবার শ্রীরামপুরে ( Serampore )  অবস্থানে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

সকাল ১১টা থেকে শ্রীরামপুরের বটতলায় অবস্থানে বসবেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত ছাড়াও এই অবস্থানে যোগ দেবেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।


 ৫ ঘণ্টা চলে টানাপোড়েন


দলীয় কর্মীদের দেখতে রিষড়া যাওয়ার পথে, সোমবার দুপুরে কোন্নগরের বিশালাক্ষীতলায় আটকানো হয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কনভয়। তিন দিক দিয়ে ব্যারিকেড করে রাস্তা আটকানো হয়। গাড়ি থেকে নামতে বাধা দেওয়া হয় বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে। এরপরই, উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পাশাপাশি 
ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। যখন, পুলিশের গার্ডরেল ধরে ঠেলাঠেলি করছেন বিজেপির কর্মীরা, তখন গার্ডরেলের সামনে গাড়িতে বসে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির আরেক সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো। প্রায় ৫ ঘণ্টা চলে টানাপোড়েন। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। সোমবারই সুকান্ত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ' গ্রেফতারি না বন্ধ করলে অবস্থানে বসব, প্রয়োজনে অনির্দিষ্টকাল চলবে, যদি এই গ্রেফতারি বন্ধ না হয়। ' 


রাতে ট্রেন লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি


তারপর সোমবার রাতে নতুন করে অশান্ত হয় রিষড়া। ট্রেন লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি, ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়ে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও একের পর এক ইট, পাথরের টুকরো ছোড়া হয়। সোমবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে রিষড়ার চার নম্বর রেলগেট এলাকায় দফায় দফায় গণ্ডগোল হয়। রেললাইনে নেমে কার্যত তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের গাড়ি
ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।  

স্তব্ধ হয়ে যায় রেল পরিষেবা

শেষপর্যন্ত র‍্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। অশান্তির জেরে রাত ১০টা থেকে হাওড়া-ব্যান্ডেল মেইন লাইনে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় রেল পরিষেবা। একের পর এক স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেন। শ’য়ে শ’য়ে মানুষ আটকে পড়েন। হাওড়া স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন যাত্রীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা পর, রাত সোয়া ১টা নাগাদ হাওড়া স্টেশন থেকে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। গতকালের তাণ্ডবের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৬ জনকে গ্রেফতার করেছে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ । 

এরপর আজ আবার সুকান্ত মজুমদারের অবস্থান ঘিরে নতুন করে কোনও উত্তাপ ছড়ায় কিনা সেই নিয়েই ঘনাচ্ছে দুশ্চিন্তার মেঘ।