পাথরপ্রতিমা: বড়দিনের আগে কুলতলির পর সুন্দরবনের লোকালয়ে আবারও বাঘের আতঙ্ক। কার্যত তটস্থ হয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। পাথরপ্রতিমার শ্রীধরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপেন্দ্রনগরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। শোনা গিয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের গর্জনও। পাশের ঠাকুরাইন নদীর চর, ধান জমিতে পায়ের ছাপ দেখার পর থেকেই ভয়ে কার্যত গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। খবর দেওয়া হয়েছে বনদফতরকেও। বাঘবন্দীর উদ্দেশ্যে বনদফতরের রামগঙ্গা রেঞ্জের কর্মীরা পাশের ধনচির জঙ্গলটি নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার কাজ শুরু করেছে। রাতে বাঁশ, লাঠি নিয়ে পাহারা দিচ্ছে গ্রামবাসীরা। নদীর চরে জ্বালোনো হয়েছে টায়ার ও মশাল।
জলপাইগুড়িতে খাঁচাবন্দী বাঘ: এর আগেও একাধিক জায়গায় বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কিছুদিন আগেও প্রকাশ্যে এসেছিল জলপাইগুড়ির খবর। সন্ধেয় নামলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ত গোটা এলাকায়। কোনও দিন নিখোঁজ হয়ে যেত ঘরের পোষা ছাগল। কোনওদিন সকালে উঠে দেখা যেত বাড়ির পোষা মুরগির খাঁচা ফাঁকা। কখনও কখনও সন্ধে নামলেই শোনা যেত চিতাবাঘের গর্জন। আতঙ্কে সিঁটিয়ে যেতেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ জমা পড়ছিল বন দফতরের কাছে। তড়িঘড়ি চিতাবাঘ পাকড়াও করার জন্য চেষ্টা শুরু করেন বন দফতরের কর্মীরা। বসানো হয় খাঁচা।
দীর্ঘ চেষ্টার পর অবশেষে জলপাইগুড়ির মেটেলি ব্লকের নাগেশ্বরী চা বাগানে (Nageshwari Tea Garden) ধরা পড়ে চিতাবাঘ (Leopard)। গত বৃহস্পতিবার, বাগানের স্থানীয় বাসিন্দারা নাগেশ্বরী চা বাগানের ১২ নাম্বার সেকশনে বসানো খাঁচা থেকে চিতাবাঘের গর্জন শুনতে পায়। গর্জন শুনেই খাঁচার কাছে যান গ্রামবাসীরা। সেখানে দেখা যায় একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ খাঁচার ভিতর এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। খবর চাউর হতেই বহু মানুষের ভিড় হয় এলাকায়। খাঁচায় চিতাবাঘ ধরা পড়ার খবর দেওয়া হয় বন দফতরের খুনিয়া স্কোয়াডে। সেখান থেকে বনকর্মীরা এসে খাঁচা-সহ চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
আলিপুরদুয়ারেও বাঘ আতঙ্ক: একই চিত্র ধরা পড়েছিল আলিপুরদুয়ারেও । কার্যতই বাঘের আতঙ্কে ঘুম উড়েছিল স্থানীয়দের। তবে শেষ রক্ষা হয়েছে সেখানেও। বন দফতরের (Forest Department) পাতা খাঁচায় ধরা পড়ে পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতা বাঘ (Alipurduar Cheetah Rescu)। মাদারিহাট ব্লকের রামঝোড়া চা বাগানের ঘটনায় স্বস্তি পায় শ্রমিক মহল।
গত ১৮ ডিসেম্বর, সোমবার ভোরে আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটের রামঝোড়া চা বাগানের ১৪ নম্বর সেকশনে চিতা বাঘটি ধরা পড়ে। বেশ কয়েকদিন ধড়েই চিতাবাঘের আনাগোনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল বাগানে। বনদফতর খাঁচা বসাতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত খাচাবন্দি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে বাগানে। জলদাপাড়া বনদপ্তরের দলগাও রেঞ্জ কর্মীরা উদ্ধার করে নিয়ে যায় চিতাবাঘটিকে। বন দফতর সূত্রে খবর, স্বাস্থ পরীক্ষার পরই গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।