বিজেন্দ্র সিংহ, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : উপাচার্য নিয়োগ (Vice Chancellor Recruitment) ঘিরে রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে চলতে থাকা সংঘাতের মাঝে সুপ্রিম-পদক্ষেপ। পদক্ষেপ করার পাশাপাশি যে সংঘাতের মাঝে পরামর্শও দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। 


উপাচার্য নিয়োগ মামলায় শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) নির্দেশ দিয়েছে, যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁরা কোনও ভাতা বা সুযোগ সুবিধা পাবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, মামলা চলাকালীন রাজ্যপাল আর কোনও উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। পাশাপাশি রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং আচার্যকে 'কফির টেবিলে' বসে আলোচনার পরামর্শও দিল সর্বোচ্চ আদালত।


শুক্রবার শুনানির সময় আদালতে রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, মামলা বিচারাধীন থাকাকালীনও ১২ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Governor CV Ananda Bose)। এটা ঠিক নয়। এরপরই এই নিয়ে সি ভি আনন্দ বোসের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস দেয় সুপ্রিম কোর্ট। 


সর্বোচ্চ আদালতের বক্তব্য, একটা বা দুটো নাম আছে যা মুখ্যমন্ত্রী ও আচার্য দু'জনের কাছেই গ্রহণযোগ্য। আদালত তাঁদের (উপাচার্য) নিয়োগ দিতে পারে। বরফ ভাঙতে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালকে একসঙ্গে বসে আলোচনার পরামর্শও দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তখন রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, আমরা (রাজ্য সরকার) আচার্যকে বৈঠকের জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি।


রাজ্য সরকারের এই অভিযোগ শুনে বিচারপতি বলেন, একটা সময় ঠিক করে দু'পক্ষ (মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল) কফির টেবিলে বসতে পারেন। মতের অমিল হতেই পারে, তার মানে এই নয় আমরা দেখা করি না। বৈঠকে রফাসূত্র বেরিয়ে এলে আদালতকে সেটাও জানাতে নির্দেশ দেন বিচারপতি। এরপর রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন,
উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটির জন্য আচার্য, ইউজিসি ও রাজ্য সরকারের কাছে থেকে নাম চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকারের জন্য তা ২-১ হচ্ছে। আরও ২ জনকে কমিটিতে যোগ করা উচিত। একজন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি ও আরেক জন উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধিকে রাখা হোক। তা হলে ৫ জনের কমিটি হবে।

রাজ্য সরকারের আইনজীবীর এই প্রস্তাব শুনে বিচারপতি বলেন, তা হলে তো তা আপনাদের পক্ষে হয়ে যাবে। যদি আদালত সার্চ কমিটি গঠন করে দেয়, তা নিয়ে আপনাদের কী বক্তব্য ? উত্তরে রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, আমার (রাজ্য সরকার) কোনও সমস্যা নেই। সার্চ কমিটিতে আদালতের তরফে একজন প্রতিনিধি রাখার প্রস্তাবও দেন তিনি।


সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Education Minister Bratya Basu) বলেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর কথা না শোনার জন্য তাঁর কাছে দুঃখপ্রকাশ করাও উচিত রাজ্যপালের। আমরা যে সুবিচার চেয়েছিলাম, সুপ্রিম কোর্ট তাতে সিলমোহর দিয়েছে। এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, এই বাড়ির অস্থায়ী বাসিন্দার জন্য দুঃখই হচ্ছে। আচার্যের পরাজয় হলে আমাদের তো খারাপ লাগারই কথা। আমরা চাইব, রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকে বসুন। বাইরের কারও হস্তক্ষেপ আর দরকার পড়বে না।' ৩১ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিনই উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন করে দিতে পারে সর্বোচ্চ আদালত।


আরও পড়ুন- পুজোর মুখে সুখবর শোনাল কলকাতা মেট্রো, ভোররাত পর্যন্ত চালু থাকবে পরিষেবা, কবে কতক্ষণ ?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial