নয়াদিল্লি: মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং তার জেরে হড়পা বান। দুইয়ের জেরে বাঁধভাঙা বন্যায় ভেসে গিয়েছে সিকিম। দু কূল ছাপিয়ে বইছে তিস্তা। তার জেরেই প্রবল জলের তোড়ে ধুয়ে মুছে সাফ সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সিকিমে। এই পরিস্থিতিতে অগ্রিম আর্থিক সাহায্য়ের কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র।
সিকিমের স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফান্ড (State Disaster Responce Fund)-এ কেন্দ্রের যে অংশ রয়েছে তার থেকেই ৪৪.৮ কোটি টাকা অ্যাডভান্স অ্যামাউন্ট দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বন্যা দুর্গত এলাকায় যাতে দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ টালানো যায় তার জন্যই এই টাকা অগ্রিম ঘোষণা করে দেওয়া হল। বন্যা দুর্যোগ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার সবরকম ভাবে সিকিম রাজ্য সরকারের পাশে রয়েছে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
অমিত শাহের নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আন্তঃ মন্ত্রক কেন্দ্রীয় দল (Inter Ministerial Central Team) তৈরি করেছে যেটি সিকিমের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবে। সম্প্রতি সিকিমে হওয়া মেঘভাঙা বৃষ্টি, হিমবাহ হ্রদ ভেঙে পড়া এবং হড়পা বানের কারণে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটাই খতিয়ে দেখবে ওই দল। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই ন্য়াশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফান্ড (National Disaster Relief Fund)-এর মাধ্যমে প্রয়োজনে আরও আর্থিক সাহায্য করা হবে।
৪ অক্টোবর, বুধবার একেবারে ভোররাতে মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয় সিকিমে, হিমবাহ হ্রদ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল নামে তিস্তা নদীতে। তার জেরেই হঠাৎ বেড়ে যায় তিস্তার জলস্তর। তার ধাক্কায় একাধিক সেতু, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বেশ কিছুটা অংশ ভেঙে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে চুংথাং বাঁধও। তিস্তার জল বেড়ে গিয়ে একাধিক ছোট শহর, একাধিক প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে সঙ্গে সঙ্গেই। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোগত সহযোগিতাও দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রের তরফে। NDRF-এর বাহিনী, ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টার, সেনা জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ চালাতে যা যা যন্ত্রপাতি প্রয়োজন সেগুলিও আনা হয়েছে সিকিমে।
পিটিআই সূত্রের খবর, ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্প, রাস্তা, জাতীয় সড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত ঠিক করতে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে টেকনিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে।
PTI-সূত্রের খবর, সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিংহ তামাং শুক্রবার জানিয়েছেন, আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে উদ্ধারকাজ চালানো এবং ত্রাণ দেওয়াই তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, 'ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সম্পূর্ণ পরিদর্শনের পরেই আমরা ঠিক অঙ্কটা জানতে পারব। ১৩টি সেতু ভেঙ গিয়েছে। উত্তর সিকিমের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।' সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, '১৯ জনের দেহ এখনও পাওয়া গিয়েছে। ১০৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ২৬টি এলাকায় ত্রাণ শিবির চলছে।' কেন্দ্রের তরফে যে ৪৪.৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে তিনি জানান, এটি আপাতত দেওয়া হয়েছে, এখনই ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য।
আরও পড়ুন: ইরানে নারীমুক্তি আন্দোলনের নেত্রী, জেলে থেকেই পেলেন নোবেল শান্তি পুরস্কার