বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি : সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) স্বস্তি পেলেন না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। তাঁকে এবং পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকারকে কোনও রক্ষাকবচ দিল না সর্বোচ্চ আদালত। তদন্তকারী সংস্থাকে যদি সহযোগিতাই করেন, তা হলে গ্রেফতারির আশঙ্কা কেন করছেন ? প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী শুক্রবারের মধ্যে এই বিষয়ে সিবিআইয়ের (CBI) বক্তব্য শুনতে চেয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।


নিয়োগে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির (Recruitment Scam) অভিযোগে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে আগেই গ্রেফতার করেছে সিবিআই। একই মামলায় গ্রেফতারির আশঙ্কা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও অস্বস্তি কাটল না বর্তমান পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালের। সোমবার তাঁকে কোনও রক্ষাকবচ দিল না সর্বোচ্চ আদালত। রক্ষাকবচ পেলেন না পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকারও।


বরং সুপ্রিম কোর্ট এই প্রশ্ন তুলল যে, আপনারা যদি সহযোগিতাই করেন, তা হলে গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন কেন ? OMR কেলেঙ্কারি মামলায় গত ১৮ অক্টোবর, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ও ডেপুটি সেক্রেটারিকে CBI তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার নির্দেশ দেন। সেদিন হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পেশ করা রিপোর্ট দেখে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এও বলেন যে, পর্ষদের কোনও আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে বলে মনে করলে, CBI তা করতে পারে। এমনকী, তদন্তে সহযোগিতা না করলে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মনে করলে তাঁদের হেফাজতেও নিতে পারে।


এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল এবং ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার। তাঁদের পক্ষ থেকে সওয়াল করা হয়, ২০১৪ থেকে ২০১৭-র মধ্যে এই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আর আমাদের নিয়োগ করা হয়েছে ২০২২-এ।  তদন্তে সহযোগিতা করছি ১ বছর ধরে। আদালতের নির্দেশে সিবিআইয়ের মুখোমুখিও হয়েছি। রাত ১১টা পর্যন্ত আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এবার আইনি রক্ষাকবচ দেওয়া হোক।


বিচারপতিরা বলেন, এই বিষয়ে সিবিআইয়ের বক্তব্য শুনতে চান। ৩ নভেম্বর অর্থাৎ পরের শুক্রবারের মধ্যে তাদের বক্তব্য জানানোর জন্য নোটিস ইস্যু করা হচ্ছে। তখন মামলাকারীরা, সিবিআইয়ের বক্তব্য জানানো পর্যন্ত তাঁদের রক্ষাকবচ দেওয়ার আবেদন জানান। একথা শুনে বিচারপতিরা বলে দেন, শুক্রবার পর্যন্ত অপেক্ষা করলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না! তদন্তে সহযোগিতা করছেন বলে তো আপনারা নিজেরাই জানাচ্ছেন। তাহলে গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন কেন? আমরা সিবিআইকে তাদের বক্তব্য জানাতে বলে নোটিস দিচ্ছি। তাদের বক্তব্য শোনার পরে, রক্ষাকবচের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে। এবার এই মামলায় সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে কী জানায়, সেটাই কৌতুহলের বিষয়।


আরও পড়ুন- ইডি দফতরের সেলে থাকার আলাদা ব্যবস্থা, সকাল থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে টানা জেরা