সৌমিত্র রায়, ময়ূখঠাকুর চক্রবর্তী ও অনির্বাণ বিশ্বাস : বিধানসভা ভোটের আগে চ্যালেঞ্জ-পাল্টা চ্যালেঞ্জে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের সভা থেকে তৃণমূল সরকারকে উৎখাতের ডাক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার। পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। 

Continues below advertisement

বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে বাগযুদ্ধের পারদ এখন থেকেই সপ্তমে। শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের সভা থেকে তৃণমূল সরকারকে উপড়ে ফেলার ডাক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার। সেই সঙ্গে তাঁদের মুখে শোনা গেল জোট বাঁধার কথা। বিরোধী দলনেতা বলেন, "বাবা মা-রা পয়সা খরচ করে ছেলে-মেয়েদের আর পড়াতে চান না। তৃণমূল থাকলে চাকরি হবে না। ফাঁকা খাতা না দিলে চাকরি হবে না। গোটা গ্রামে গ্রামে আপনাদের জোট বাঁধতে হবে। ওরা বলছে পাড়ায় সমাধান। আপনারা কী বলবেন ? আমার পাড়া... তৃণমূলকে তাড়াতে হবে।" তাঁর সংযোজন, "এই সরকারকে আমাদের উপড়ে ফেলে দিতে হবে, নইলে পশ্চিমবঙ্গ থাকবে না।"

জবাবে তৃণমূল বিধায়ক ও পুর-নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বঞ্চনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। যেটা ন্যায্য পাওনা বাংলার মানুষের। সেটা দিচ্ছে না। সেটা আগে করতে বলো। ন্যায়বিচার একতরফা হয় না। বাংলার মানুষকে বঞ্চনা করেছে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা। সেই টাকা আনাক। তাঁদের যাঁরা পিতামহরা বসে আছেন দিল্লিতে, তাঁদের কাছে আর্জি করুক। এরাই তো এখান থেকে উস্কানি দিয়ে....সামনা-সামনি লড়তে পারেন না, বাংলার মানুষ সাফার করছেন।"

Continues below advertisement

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, "ওঁদের ব্যর্থতা, জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত। ধারাবাহিকভাবে বিজেপির ব্যর্থতা চলছে। কিন্তু, ওই কিছু কর্মী-সমর্থকের নাকের ডগায় গাজর ঝুলিয়ে রাখার মতো একটা ক্যালেন্ডার পলিটিক্স করে।" 

বিজেপির দাবি, গঙ্গারামপুরের এই সভা করতে চেয়ে আবেদন করলেও পুলিশ তার অনুমতি দেয়নি। অনুমতি ছাড়াই এদিন গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামের মাঠে সভা করে বিজেপি। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, "আজ সভা হবে। শুভেন্দু অধিকারী এবং আমি একসঙ্গে থাকব। পুলিশের দম থাকলে আটকে দিক। দেখি, আমাদের সভা কীভাবে আটকায়। পুলিশ আমাদের কিছু করতে পারবে না, কাঁচকলাও করতে পারবে না। পুলিশের ভয় পাবেন না।" তাঁর সংযোজন, "এইবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চোর সরকারকে আমরা উৎখাত করে তবেই ফেলব।" পাল্টা কুণাল ঘোষ বলেন, "ওঁরা পুলিশকে মানেন না আমরা জানি। শোভাযাত্রা যাচ্ছিল বিসর্জনের...রাস্তায় আইন ভেঙে, যানজট, তীব্র শব্দ, পুলিশের অফিসার বলেছেন এভাবে করবেন না আর সাউন্ডটা কমান। তাঁকে মঞ্চ থেকে এনে ফেলে মারা হল।" 

ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে বাগযুদ্ধের আঁচে তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু ভোটের বাক্সে কার শিকে ছিঁড়বে? শেষ কথা বলবেন ভোটাররাই।