শিলিগুড়ি : "এমন কাজ করব যাতে উত্তরবঙ্গের মানুষ আগামী দিনে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার বা বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা না ভাবেন।" এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পাশাপাশি উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দু বলেন, "গোটা উত্তরবঙ্গই অবহেলিত। উত্তরবঙ্গ থেকে পরিযায়ী শ্রমিক বেশি। উত্তরবঙ্গে চা বাগান বেশি বন্ধ হয়েছে। উত্তরবঙ্গে বালি, পাথর, গাছ বেশি পাচার হচ্ছে। নদীগুলোর অস্তিত্ব উত্তরবঙ্গে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের হাসপাতালগুলোর বেহাল অবস্থা।" এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী কার্যত এখানে বেড়াতে আসেন। সন্ধের পরে লুকিয়ে লুকিয়ে ভাল ভাল রেস্তোরাঁ যেগুলো আছে সেখানে গিয়ে বোরোলি মাছ খান।"
উত্তরবঙ্গ নিয়ে বিজেপির রোডম্যাপ কী ? শুভেন্দুর কথায়, "উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেব। আমাদের স্লোগান এটাই থাকবে, বন্ধ চা বাগান খুলতে হবে। পাহাড়ে, তরাইয়ে, ডুয়ার্সে ট্যুরিজমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। স্বাস্থ্য-শিক্ষার পরিষেবা বাড়াতে হবে। আইআইটি-এইমসের মতো অর্গানাইজেশন এখানে আনতে হবে। বর্ডারকে আরও সুরক্ষিত করতে হবে যাতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী না আসতে পারে। মালদা, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার থেকে শুরু করে সব জায়গা থেকে যে শ্রমিকরা এখান থেকে চলে গেছেন, হাতে কাজ...পেটে ভাত...মাথায় ছাদ। এটাই বিজেপির অঙ্গীকার। বিরাট এমএসএমই-র সুযোগ রয়েছে। আনারস, ভুট্টা, চা বাগান, মালদার আম-সহ নানা সুযোগ রয়েছে হর্টিকালচার প্রসেসিংয়ের।"
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, "বিজেপির সরকার এলে উত্তরবঙ্গে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে MSME-র সুযোগ তৈরি করব। এমন কাজ করব যাতে উত্তরবঙ্গের মানুষ আগামী দিনে উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার বা বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা না ভাবেন। তাঁরা এটা বলেন অভিমান থেকে। স্বাধীনতার এতদিন পরে তাঁদের অধিকার তাঁরা পাননি বলে। "
এদিন চ্যাংড়াবান্ধায় শুভেন্দু অধিকারীর সভার আগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অস্থায়ী মঞ্চ লাগাতে পুলিশ বাধা দেয় বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায়ের সঙ্গে পুলিশের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। আজ চ্যাংড়াবান্ধায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্কল্প যাত্রা রয়েছে। চ্যাংড়াবান্ধা বাইপাস থেকে VIP মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি হবে বিরোধী দলনেতার। পুলিশ বাধা দেওয়ার পর হাইকোর্ট থেকে কর্মসূচির অনুমতি পেয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
বিজেপি অভিযোগ করেছিল, বারবার আবেদন করেও পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি পায়নি তারা। বাধ্য হয়ে তারা হাইকোর্টে যায় এবং সেখান থেকে অনুমতি পেয়েই এই সভা করবে।