এগরা, পূর্ব মেদিনীপুর: এগরার খাদিকুলে পৌঁছলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এগরায় বাজি কারখানা বিস্ফোরণের এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৯ জন। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনহারাদের পরিবার। গোটা ঘটনায় রাজ্য প্রশাসনকে তুলোধনা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি। সেই দাবিতে মিছিলেরও ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু।  


শুভেন্দুর তোপ:
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এগরায় ২৫ হাজার লোক নিয়ে মহামিছিল হবে। পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে মহামিছিল হবে।' এগরায় ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবিও করেছেন তিনি। সেই দাবিতে আদালতে আবেদনও জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী। সেই বিষয়ে মুখ খুলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এনআইএ তদন্ত হবে, পুলিশের ভূমিকা সামনে চলে আসবে।' বিরোধী দলনেতার নিশানায় সিভিক ভলান্টিয়ারও। তিনি বলেন, 'সিভিক ভলান্টিয়ারদের তোলা তুলতে ব্যবহার করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ জ্বলছে, বগটুই থেকে শুরু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে না সরালে বাংলার পরিত্রাণ নেই।' এগরায় যার বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়েছে সেই ব্য়ক্তি ভানু বাগের বাড়িও পাহারা দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। এমনটাই অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর। প্রমাণ লোপাট ঠেকাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। 


তৃণমূলের দাবি:
তৃণমূলের রাজ্য় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাজি কারখানায় বিরস্ফোরণ। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন এনআইএ হলেও আপত্তি নেই। সেখানে উনি, বিরোধী দলনেতা কী বললেন না বললেন তা অপ্রাসঙ্গিক।'
 
এদিনই এগরার গ্রামে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। মানস ভুঁইয়া ও দোলা সেনের নেতৃত্বে খাদিকুল গ্রামে যায় ওই প্রতিনিধি দল। তাঁদের দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীদের একাংশ। চোর চোর স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তারপরেই গ্রাম থেকে বেরিয়ে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। 


চলছে চিকিৎসা:
SSKM-র রোনাল্ড রস বিল্ডিং-এ ভর্তি রয়েছেন এগরার খাদিকুল গ্রামে বিস্ফোরণে গুরুতর জখম ২ জন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দুজনেরই অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জখম বছর ২৬-এর পিঙ্কি মাইতি ও বছর ৩৮-এর রবীন্দ্র মাইতির শরীরের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশই পুড়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দুজনের শরীরের বিস্ফোরণজনিত ক্ষত রয়েছে। দু'জনকেই অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু'জনের অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। তাঁরা যে ওয়ার্ডে রয়েছেন, তার আশেপাশে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। 


এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডে বাজি কারখানার মালিক ভানু বাগের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। আগেও একাধিকবার বিস্ফোরণ হয় ভানু বাগের বাজি কারখানায়। ১৯৯৫ সালে প্রথমবার বিস্ফোরণ হয় ভানুর বাজি কারখানায়। সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৫ জনের। ২০০১ সালে ফের বিস্ফোরণ হয় ভানু বাগের বাজি কারখানায়। মৃত্যু হয় ভানুর ভাই বিষ্ণুপদ বাগ-সহ ৩ জনের। ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সাহারা অঞ্চলের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন ভানু।

আরও পড়ুন: রোজ কলা খেলে কি নিয়ন্ত্রণে থাকে হাই ব্লাড প্রেসার?