কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ধরাশায়ী হয়েছে দল। ৩০ আসনে জয়ের লক্ষ্য রাখলেও, ১২তেই থেমে যেতে হয়েছে বিজেপি-কে। সেই নিয়ে এবার বামেদের কাঠগড়ায় তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর অভিযোগ, এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে জিততে সাহায্য করেছে সিপিএম। অন্তত ১২টি আসনে তৃণমূলকে জেতাতে সিপিএম ভোট কেটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। (Suvendu on CPM)
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি-র ধরাশায়ী হওয়া নিয়ে দলের অন্দরেই কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। সেই আবহে, বৃহস্পতিবার সিপিএম-কে কাঠগড়ায় তুললেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, "লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে ১২টি আসনে তৃণমূলকে জিততে ভোট কেটে সাহায্য় করেছে বামেরা।"
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও সিপিএম তৃণমূলকে সাহায্য় করেছিল বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, "বামেরা কোনও আসনেই জেতার জায়গায় ছিল না। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ৫৬টি আসনে তৃণমূলকে জিততে সুবিধে করে দিয়েছিল সিপিএম। এবারও একই অ্যাজেন্ডা নিয়ে ময়দানে নেমেছিল বামেরা। তৃণমূলকে ১২টি আসনে জেতানোই লক্ষ্য ছিল সিপিএম-এর। ওদের মিটিং মিছিলে মুসলিমরা গেলেও ভোট দেয় না, ওরা হিন্দু ভোট কাটে, সনাতনীদের ভোট কাটে, এখানে সুজন, ওখানে সৃজন, সেখানে সব্যসাচী। শতকরা ৯৫ জন মুসলিম তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। ওদের কৌশল সফল হয়েছে।"
আরও পড়ুন: UGC-NET Cancellation: ১৮ জুনের UGC-NET বাতিল! CBI তদন্তের নির্দেশ! কী হবে পরীক্ষার্থীদের?
৩৪ বছর ধরে যারা বাংলাকে খেয়েছে, ৫৪ হাজার মানুষকে খুন করেছে, সাঁইবাড়ি, নন্দীগ্রাম, নানুর, সূচপুর ঘটনা ঘটিয়েছে, কল-কারখানায় তালা ঝুলিয়েছে, সেই সিপিএম নিজেদের অ্যাজেন্ডায় সাময়ির সফল হলেও, সময় কথা বলবে বলেও এদিন মন্তব্য করেন শুভেন্দু।
তবে তাঁকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "শুভেন্দুর গলায় হতাশা স্পষ্ট। তৃণমূলের ভঙ্গিতে, ভাষায় কথা বলেছেন উনি। তৃণমূলের মনোভাব নিয়ে উনি বিজেপি-র নেতা। তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্য়ে এটাই চলে। হতাশা এবং উষ্মা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নয়, আসলে বামেদের বিরুদ্ধে রাগ, সিপিএম-এর বিরুদ্ধে। কে বেশি বাম বিরোধী, তা নিয়ে এখন প্রতিযোগিতা চলছে ওদের মধ্যে। বামেরা যদি নিজেদের ভোটে তৃণমূলকে জেতাতে সাহায্য় করে থাকে, তাহলে তো বামেরা নিজেদের ভোটে আসলে তো বিজেপি-কে হারাতে সাহায্য় করেছে! এটা তো আমাদের ঘোষিত অবস্থান। দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে রক্ষা করা উচিত। বিজেপি বাংলায় তৃণমূলকে সাহায্য করেছে, নইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলে থাকতেন। বিজেপি-কে পরাস্ত করা আমাদের কাজ। বিজেপি-কে হারানোর লোকজন তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।"
শুভেন্দুকে এদিন কটাক্ষ করেন তৃণমূলের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্যও। তাঁর কথায়, "তৃণমূল প্রতিবারই নির্বাচনে জেতে, আর প্রতিবারই কেউ কেউ না দাবি করে, অন্য কোনও পক্ষ তৃণমূলকে জিতিয়ে দিয়েছে। আসলে নাচ না জানলে উঠোন বাঁকা। বিজেপি-কে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। এখনও সিপিএম-এর অহঙ্কার কমেনি,তাই মানুষ মুখ ফিরিয়েছেন। কংগ্রেস কিছু কিছু জায়গায় এখনও রয়েছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত ঠিক ভাবে নিতে পারেনি বলেই আসন দুই থেকে কমে এক হয়েছে। যারা এই নির্বাচনে কোনও পক্ষ নেয়নি, তারা সকলেই পরাজিত হয়েছে।"