কলকাতা: ইদানিং বেশ কিছু এলাকায় আলুর বন্ড বিলি ঘিরে আলুচাষিদের (Potato Farmer) বিক্ষোভ সামনে এসেছে। এবার সেই ঘটনা বিধানসভা চত্বরে তুলল বিজেপি। বিধানসভার বাইরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি বিধায়করা।
কোন দাবিতে বিক্ষোভ:
আলুর সহায়ক মূল্য দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি (BJP) বিধায়করা। আলুচাষিদের কৃষি ঋণের এই মাসের কিস্তি সরকারকে পরিশোধ করার জন্য দাবি জানান তাঁরা। পাশাপাশি, জঙ্গল কেটে ফেলার প্রতিবাদে শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখান উত্তরবঙ্গের বিধায়করা।
কদিন আগেই আলুর বন্ড দেওয়া নিয়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল কোচবিহার (Cooch Behar)। আলুর বন্ডকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছিল কোচবিহার (Cooch Behar) ১ নম্বর ব্লকের দেওয়ানহাট এলাকা। পুলিশের সাথে খন্ড যুদ্ধ বাধে কৃষকদের (Clash)। এমনকি লাঠিচার্জ কাঁদানো গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কিছু চাষী (Farmer)। পাশাপাশি বেশ কিছু পুলিশ কর্মী নিয়োগ আহত হয়েছে বলে খবর। হিমঘরে আলু রাখার বন্ড দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় উত্তর দিনাজপুরেও। বন্ড পেতে গিয়ে, পুলিশের লাঠি খেতে হয় চাষিদের। ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর হিমঘরে, বন্ডের কুপন বিলি করা হচ্ছিল। সকালে হিমঘর খুলতেই গেটের সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ধাক্কাধাক্কিতে কয়েকজন আলু চাষি আহত হন। চাষিদের একাংশের অভিযোগ, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও তাঁরা কুপন পাননি। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। অভিযোগ, পুলিশকেও ধাক্কা মারা হয়। এরপরই লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জলপাইগুড়ি সদরের গড়ালবাড়িতেও। হিমঘরে আলু রাখতে, সকাল থেকে গঙ্গা কোল্ড স্টোরেজে বন্ড বিলি শুরু হয়। সূত্রের খবর, দুপুর ২টো পর্যন্ত ৩ হাজার বন্ড বিলি করা হয়েছে। পরে বন্ড দেওয়ার জন্য, বাকিদের নির্দিষ্ট সংখ্যক কুপন দেওয়া হয়। কিন্তু, সেই কুপন সবার কপালে জোটেনি। এরপরই তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশ তাঁদের সরে যেতে বললে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। অভিযোগ এরপরই পুলিশকে লক্ষ করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। ইটের ঘায়ে জখম হয়েছিলেন পুলিশ অফিসারও। পাল্টা বিক্ষোভকারীদের হঠাতে লাঠি চালায় পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল।
পথে বাম:
আলুর জন্য রাজ্য সরকার যে সহায়ক মূল্য ঘোষণা করেছে, তাতে কৃষকের চাষের খরচটুকুও উঠবে না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই অভিযোগ তুলে সুর চড়াতে শুরু করেছে বামপন্থী কৃষক সংগঠন কৃষকসভা। আলুর ন্যূনতম সহায়কমূল্য বাড়ানোর দাবিতে, বাঁকুড়ার ওন্দা বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি, সংগঠনের তরফে মিছিলও করা হয়েছিল।
বারবার সংঘাত:
নন্দীগ্রাম দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে সংঘাত রাজ্যের। ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম দিবসে শুভেন্দুর সভায় 'না' পুলিশের। পুলিশের বিরুদ্ধে অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। আজই দুপুরে শুনানির আবেদন গৃহীত। আগামী ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিচালনার ঘটনার বর্ষপূর্তি। সেই উপলক্ষে গোকুলনগরে বিজেপির কর্মসূচিতে অনুমতি দিল না পুলিশ। নন্দীগ্রাম পুলিশের দাবি, 'সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত আগেই অনুমতি নিয়ে রেখেছে তৃণমূল। অন্য কোনও রাজনৈতিক দলকে সেই কারণে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।' পুলিশের তরফে বিজেপিকে অনুষ্ঠানের সময়সূচি বদল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব মানেনি বিজেপি। এরপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি।
আরও পড়ুন: 'মুকুল রায় বিজেপিতেই', স্পিকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা শুভেন্দুর