বিটন চক্রবর্তী ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : এ রাজ্যে SIR এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। আর এই আবহেই বিজেপির মুখে ১ কোটি নাম বাদের ভবিষ্যদ্বাণী শোনা গেছে। পাল্টা কখনও নির্বাচন কমিশন-বিজেপির আঁতাঁতের অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। কখনও হুমকি-হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে শুভেন্দু অধিকারী ফের স্পষ্ট করলেন, রাজ্যে SIR হবেই।
দুর্গাপুজো শেষ। কালীপুজোও শেষ। পশ্চিমবঙ্গে যে কোনও দিন শুরু হয়ে যাবে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন। এই আবহে বিধানসভা ভোটের আগে SIR নিয়ে হুমকি-হুঁশিয়ারি, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে তপ্ত রাজনীতির ময়দান। ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনে ১ কোটি নাম বাদ যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে বিজেপি। পাল্টা বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে একযোগে বিঁধেছে তৃণমূল।
বিরোধী দলনেতার কথায়, "সঠিক SIR হলে গত ১০-১২ বছরে বাংলাদেশের মুসলমান যেভাবে ঢুকেছে, কাঁটাতারের বেড়া না থাকার ফলে, তাতে ১ কোটিরও বেশি নাম বাদ যাওয়া উচিত।" এর জবাবে পুর ও নরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, "যদি বিরোধী দলনেতা নিজেই বলে দেন যে ১ কোটি নাম বাদ যাবে আর নির্বাচন কমিশন তার হুকুমের দাস হন, তাহলে গণতন্ত্র সত্যি সত্যিই বিপদের মুখে। এটা তো নির্বাচন কমিশনের জবাব দেওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশন বিজেপি নেতৃত্বের দলদাস না স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থা ? কী নির্বাচন কমিশন ? কত নাম বাদ যাবে যদি বিজেপির ফরম্য়াটে যদি হয়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। একটাও আসল ভোটার বাদ গেলে তার প্রতিবাদ হবে।"
SIR নিয়ে হুমকি-হুঁশিয়ারির স্রোত বইয়ে দিচ্ছেন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা। তৃণমূল বিধায়ক ও বস্ত্র ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেছেন, "কোনও যদি আমাদের, কোনও একটা ভোটার, তালিকা থেকে কোনও একজনকে যদি বের করে, তাহলে আমাদের এই হরিশ্চন্দ্রপুরের সমস্ত লোক হরিশ্চন্দ্রপুরকে লন্ডভন্ড করে দেব।" একইভাবে তৃণমূল বিধায়ক ও সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, "অন্যায়ভাবে যদি একটি লোকও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে, আমি সাবিনা ইয়াসমিন মোথাবাড়িতে লন্ডভন্ড করে রেখে দেব।"
পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, "নির্বাচন কমিশন বুঝে নেবে। আমাদের দায়িত্ব নজরদারি, চৌকিদারি করা। ২০০২ সালে আমি রাজনীতি করতাম, কাউন্সিলর ছিলাম। তখনও SIR হয়েছে। ২৬ লক্ষ লোকের নাম বাদ গেছে। এবারও SIR হবে এবং আমি কী বলেছি ? মৃত নাম বাদ যাবে, আমি বলেছি ডবল এন্ট্রি, ট্রিপল এন্ট্রি নাম বাদ যাবে, ফেক ভোটার বাদ যাবে এবং যারা ভারতীয় নয়, বাংলাদেশের মুসলমান এবং রোহিঙ্গা তাদের নাম বাদ যাবে।"
শেষ অবধি ভোটার তালিকায় কার নাম থাকবে, কার নাম বাদ যাবে, তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু তা নিয়েই তৃণমূল-বিজেপির বাগযুদ্ধ দিনে দিনে জোরালো হচ্ছে।