কলকাতা : 'নামকরণে আমাদের আপত্তি আছে।' মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস নিয়ে ফের একবার বললেন শুভেন্দু অধিকারী। এ প্রসঙ্গে নিজের যুক্তিও ব্যাখ্যা করেন বিরোধী দলনেতা। এর পাশাপাশি নিশানা করলেন হুমায়ুন কবীরকে। তাঁর উদ্দেশে বললেন, "হুমায়ুন কবীরের ভাষা তো ঠিক মহম্মদ আলি জিন্নাদের মতো ভাষা বেরোচ্ছে।" গত ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ডেড বিধায়ক।

Continues below advertisement

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, "ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমাদের পার্টির সকলে অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। আমিও বলেছি, নামকরণে আমাদের আপত্তি আছে। কিন্তু, এই যে সরকারি মদতে এক হাজার পুলিশ দিয়ে যে উল্লাসটা সংগঠিত করা হল, মোঘল-পাঠান-হানাদারদের নামে...বাবর একজন ধর্ষণকারী ছিলেন, লুঠেরা ছিলেন। তিনি ভারতের কেউ ছিলেন না। তিনি ভারত দখল করতে এসেছিলেন। ভারতের মন্দিরগুলো ভেঙে-গুঁড়িয়ে, আদিবাসীদের ধর্ম পরিবর্তন করতে এসেছিলেন। ভারত থেকে লুঠে নিয়ে ভারতের সোনা-হীরে-মণি-মাণিক্য সব আরবে নিয়ে চলে যেতে এসেছিলেন। তাঁর নামকরণে আমাদের প্রত্যেকের আপত্তি রয়েছে। আমাদের সেই আপত্তি আছে। কিন্তু, যে ধর্মীয় উন্মাদনা, পরোক্ষভাবে-প্রত্যক্ষভাবে পুলিশ-প্রশাসনের মদতে বিনা অনুমতিতে হয়েছে। টাটা সংগ্রহ হয়েছে। এটা একটি বাংলাদেশের মৌলবাদীদের যে আস্ফালন তার প্রভাব সীমান্তবর্তী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুর্শিদাবাদে দেখানো হয়েছে। এটি প্রতীকী কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করার কোনও উদ্যোগ নয়। আমরা আবারও বলি, মন্দির-মসজিদ-গির্জা-গুরুদোয়ারা তৈরি করুন। বৈধভাবে করুন। নিজেদের জায়গায় করুন। নিজেদের সম্প্রদায়ের লোকেরা অর্থ জোগাড় করে করুন। কিন্তু, এই যে একটা আস্ফালন...বাবরের নামে করব, কিছু করতে পারবে না...আমরা করব, করে দেখাব। মাইক বাজাব, লক্ষ লোকের জমায়েত করব...অনুমতি নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই...। সরস্বতী পুজো যোগমায়া দেবী কলেজে করতে গেলে হাইকোর্টে যেতে হয় ছাত্রীকে। আমাকে দোলের দাহন করতে গেলে ভবানীপুরে রাতে ৯টার পর গিয়ে গলির মধ্যে করতে হয় হাইকোর্টের অর্ডারে, কলকাতা পুলিশের আপত্তিতে। মা কালীকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় একচোখ বন্ধ করে ওখানে এগুলোর অনুমতি দিলেন। এটা মৌলবাদীদের আস্ফালন। এবং টাকা গোনা বলুন, টাকা সংগ্রহ করা বলুন।"

তাঁর সংযোজন, "কাল গীতপাঠের মতো একটি পবিত্র ধর্মীয় কার্যক্রমকে যেভাবে আর একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গ্রন্থ দিয়ে কাউন্টার করার কথা বলা হয়েছে, এটা ধর্মীয় সহাবস্থান বলে না। এই যে হুমায়ুন কবীরের ভাষা এটা তো ঠিক সোহরাবুর্দি, মহম্মদ আলি জিন্নাদের মতো ভাষা বেরোচ্ছে। এ তো হুঙ্কার, চ্যালেঞ্জ। এবং মাংস খাইয়ে করব। কী বলতে চাইছেন, সমঝদারো কা তো ঈশারাই কাফি হ্যায়।"

Continues below advertisement