কলকাতা: এক দিনে ৩ জন। এক সপ্তাহে ১৭ জন। এক মাসে জন। ভয়ঙ্কর দিকে এগোচ্ছে ডেঙ্গি (Dengue)। অকালে ঝরে যাচ্ছে একের পর এক তরুণ তরতাজা প্রাণ। গত ২৪ ঘণ্টায়, কলকাতা (Kolkata) ও সল্টলেকে (Saltlake), ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। ট্যাংরার (Tangra), একই পাড়ায় ৪ দিনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। 


এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের ডেঙ্গি-পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রের কাছে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ট্যুইট করে বলেন, ‘রাজ্যের ডেঙ্গি-পরিস্থিতি অযোগ্য সরকারের হাতের বাইরে। আর্থিক সঙ্কটের কারণেই পরিস্থিতি এত ভয়াবহ। দেউলিয়ার পথে রাজ্য সরকার, যার পরিণাম ভুগছে জনস্বাস্থ্য। প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ, পরিস্থিতি ভয়াবহ’। 


এদিকে, গত বৃহস্পতিবার, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়, ট্যাংরার ক্রিস্টোফার রোডের বাসিন্দা, ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, রিঙ্কি ভট্টাচার্যের। একসঙ্গে জ্বর ও জণ্ডিস হয় তাঁর। ১৭ অক্টোবর থেকে ভর্তি ছিলেন, আর জি কর হাসপাতালে। কিন্তু যুঝতে পারলেন না জীবনযুদ্ধে। আর সোমবার সকালে, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়, একই পাড়ার বাসিন্দা, NRS হাসপাতালের সাফাই কর্মী বুবাই হাজরার। সোমবার, ভোর সাড়ে ৩টেয় NRS হাসপতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।


আরও পড়ুন, ‘সিবিআই ম্যাজিক দেখাতে পারে, আশা করব, তারা দেখাবে’, ক্ষোভপ্রকাশ করেও আস্থা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের


এদিনই সল্টলেক AMRI হাসপাতালে, মৃত্যু হয় কেষ্টপুরের বাসিন্দা, সোমনাথ দে নামে বছর ৩৬-এর এক যুবকের। ডেথ সার্টিফিকেটে, সেপ্টিক শক ও মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওরের উল্লেখ রয়েছে। সোমবার সকালে, রুবি হাসপাতালে মৃত্যু হয়, আরেক ডেঙ্গি আক্রান্তের। সূত্রের খবর, এবছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ হাজার পেরিয়ে গেছে। এরইমধ্যে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, ডেঙ্গির তথ্য গোপন করছে রাজ্য সরকার। 


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, "তৃণমূল গ্রামে গ্রামে নিদান দিচ্ছে, যত পারো বশি করে জল পান কোরো। অসুবিধা হলে প্যারাসিটামল খাও। রাত হলে মশারি। এটাই তৃণমূলের ডেঙ্গি রোখার নিদান। নোটিফায়েড ডিজিজ। তথ্য গোপন না করে, যদি দিল্লিতে পেশ করা হয়, তাহলে রাজ্যগুলো ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য সাহায্য পেতে পারে।" 


অন্যদিকে, পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "উনি সংসদীয় গণতন্ত্রে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিশ্বাস করেন কিনা সন্দেহ। স্টেট এক্সক্লুসিভলি আমাদের ব্যাপার। সব ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ চান। এটা যে কতবড় বিপজ্জনক. এর দ্বারা তো কাঠামোই ভেঙে পড়বে।"