কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : বাম-কংগ্রেস নেতাদের সুরেই এবার সেটিং তত্ত্ব শোনা গেল বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়ের ( Tathagata Roy )  গলায়। তাঁর মতে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ( Abhishek Banerjee ) বিরুদ্ধে, কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত নিয়ে মানুষের মনে বিজেপির ( BJP ) সঙ্গে তৃণমূলের ( TMC ) আঁতাঁতের ধারণা তৈরি হচ্ছে ! তথাগত রায়ের এই মন্তব্যকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে রাজ্য-রাজনীতিতে। 


এবার হবে সবার সেটিং। বছরখানেক আগে এই টিজার ক্যাম্পেনে ছেয়ে গিয়েছিল কলকাতার পথঘাট । কী ব্যাপার, কী হতে চলেছে - তা নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতুহলের অন্ত ছিল না । এখন রাজ্যে একের পর এক কেলেঙ্কারির কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত নিয়েও উঠেছে সেই সেটিং তত্ত্ব । তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে একবন্ধনীতে ফেলে, বাম ও কংগ্রেস নেতারা যে সেটিংয়ের অভিযোগ তুলতেন, এবার সেই শব্দবন্ধ শোনা যাচ্ছে খোজ রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ের গলায়! তিনি বলেছেন, ' পারসেপশন যেটা তৈরি হয়েছে, দুটো ব্যাখ্যা আছে। যে ব্যাখ্যাটা খুব বেশি তৈরি হচ্ছে, আর যেটাকে আমি দুর্ভাগ্যজনক বলছি, সেটা হল যে লোকের ধারনা হচ্ছে সেটিং। সেটিং মানে বিজেপির সাথে তৃণমূলের একটা কোনও আঁতাঁত হয়েছে' 


বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি আরও বলেন, ' সেই আঁতাঁতের ভিত্তিতে অভিষেক যাই করে থাকুক না কেন, অভিষেককে কখনও গ্রেফতার করা হবে না বা ওরকম ধরনের কিছু করা হবে না। ওই মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং অন্যান্য যারা আছে গ্রেফতার, তাদেরও ব্যাপারটা-কে একটু বাবু-বাছা করে, একটু মোলায়েম করে, করে দেওয়া হবে। এটা হচ্ছে একটা ব্যাখ্যা। আর দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটা হচ্ছে পিকচার অভি বাকি হ্যায় দোস্ত! এখনও শেষ কথা বলার সময় আসেনি। '  


নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইতিমধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২ বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। ৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার, যেদিন দিল্লিতে বাংলার বকেয়া পাওনার দাবি-তে তৃণমূল ধর্না দেবে, সেদিনও অভিষেককে তলব করে ইডি। এই প্রেক্ষাপটেই বাম ও কংগ্রেসের নেতারা সমস্বরে অভিযোগ করছেন, বেছে বেছে গুরুত্বপূর্ণ দিনে অভিষেককে তলব করে আখেরে তৃণমূলকেই রাজনৈতিক ফায়দা তোলার সুযোগ করে দিচ্ছে বিজেপি! 


এ প্রসঙ্গে তথাগত বলছেন, ' পারসেপশন তৈরি হচ্ছে কারণ সাধারণ মানুষ বা রাজনীতিতেও যাঁরা নীচুতলার কর্মী, তারা সাধারণভাবে আশা করবে, ওকে ক্যাঁক করে ধরতে হবে ...অভিষেক তো হেজিপেঁজি লোক নয়। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো! ভয়ঙ্কর ব্যাপার। বামপন্থী নেতা শ্যামল চক্রবর্তী বলেছিলেন যে, ওই দলে একটি পোস্ট আর সব ল্যাম্পপোস্ট। এখন বলা যেতে পারে, পোস্ট একটির থেকে বেড়ে দেড়খানা হয়েছে...তো ওই আধখানা পোস্ট হচ্ছে অভিষেক। অতএব তাঁকে ধরতে হলে, তাঁর বিরুদ্ধে অকাট্য প্রমাণ ইত্য়াদি থাকতে হবে, এটা তো স্বাভাবিক।'