পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: যাদবপুরে পড়ুয়ামৃত্যুর (Jadavpur Student Death) পর ঘুম ভেঙেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। গতকাল রাতে হস্টেল পরিদর্শন করে অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি ও আধিকারিকরা। A-1 এবং A-2 ব্লকে গিয়ে পড়ুয়াদের কী অসুবিধা জানতে চাওয়া হয়। বিশেষভাবে খোঁজ নেওয়া হয়, হস্টেলে আর কোনও প্রাক্তনী আছেন কি না, সে সম্পর্কে।                     

  


হস্টেল সুপাররা জানান, অনেক বোর্ডারই চলে গিয়েছেন আতঙ্কে। যাঁরা হস্টেল ছেড়েছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাত ৮টার পর হস্টেল থেকে বেরোলে রেজিস্টারে নাম লিখে রাখার নির্দেশ দিয়েছে অ্যান্টি-র‍্যাগিং কমিটি। বাইরে থেকে হস্টেলে ঢোকার সময়ও রেজিস্টারে লিখতে হবে নাম। শিক্ষা মহলের একাংশ মনে করছে, পড়ুয়া মৃত্যুর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই তৎপরতা দেখালে বাঁচত অকালে ঝরে যাওয়া প্রাণ। 


এদিকে, বৃহস্পতিবার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে হস্টেলে নিয়ন্ত্রণ না থাকার কথা কবুল করে নিলেন ডিন অফ স্টুডেন্টস।  ডিন অফ স্টুডেন্টসকে দ্বিতীয়বার তলব করে লালবাজার। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বুধবার থেকেই ডিনকে ঘেরাও করে রাখে FSD নামে একটি সংগঠন। বৃহস্পতিবার ঘেরাওমুক্ত হওয়ার পর লালবাজারে যান তিনি।                             


আরও পড়ুন, যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর পিছনে গোটাটাই সাজানো চিত্রনাট্য, দাবি পুলিশের, কীভাবে হয়েছে সেই কাজ?


পুলিশ সূত্রে দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে গাফিলতি স্বীকার করে ডিন অফ স্টুডেন্টস জানিয়েছেন, কিছু ভুল আছে শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করছি। হস্টেলে নৈরাজ্য চলে, ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে চাইলেও কিছু করা যায় না।  বৃহস্পতিবার রজত রায়কে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, হস্টেল সুপারকেও ডাকা হতে পারে। প্রয়োজন হলে ফের  ডিন অফ সটুডেন্টসকেও ডাকতে পারে লালবাজার। হস্টেল সুপার ও ডিন অফ স্টুডেন্সের বক্তব্য মিলিয়ে দেখা হতে পারে। 


অন্যদিকে, বছরের পর বছর ধরে র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে যাদবপুরে! হস্টেলে দাপাদাপি চলত প্রাক্তনীদের। সব জানত কর্তৃপক্ষ। এবিপি আনন্দর ক্যামেরার সামনে বিস্ফোরক দাবি করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের সুপার। যদিও অনেকেরই প্রশ্ন তুলছেন, কেন এতদিন ধরে তিনি চুপ ছিলেন? ফলে যত সময় গড়াচ্ছে, যাদবপুরের মেন হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে ক্রমশ।