সন্দীপ সরকার ও বিটন চক্রবর্তী, কলকাতা: ভয়ঙ্করহারে বাড়ছে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ। ডেঙ্গির পাশাপাশি, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ম্যালেরিয়া। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, ম্যালেরিয়া আক্রান্তে দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি, সরকার ছুটি কাটাচ্ছে, কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।


এক ডেঙ্গিতে রক্ষে নেই, ম্যালেরিয়া দোসর। রাজ্যে ডেঙ্গির দাপটের মধ্যেই ম্যালেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত। অনেকক্ষেত্রে আবার একই সঙ্গে হচ্ছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া! বর্তমানে বেলেঘাটা আইডিতে বেশ কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন, যাঁদের একই সঙ্গে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া-দুইই হয়েছে। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, শেষ দু’মাসে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি। গত জুলাই ও অগাস্ট মাসে রাজ্যে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৪৪ জন। 


কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জানয়ারি থেকে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৮১২। যা দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ফ্যালসিফেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৯০২। মৃত্যু হয়েছে একজনের।


পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, ভয়ঙ্কর অবস্থা। সরকার নেই। সরকার ছুটি কাটাচ্ছে। দুর্গাপুজোয় ১১দিন, কালীপুজোয় ৮দিন, ছুটি আর ছুটি।  তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের কথায় লোডশেডিংয়ে জেতা বিধায়ক ও কী বলবে। এখনও পুরোপুরি কমেনি করোনার দাপট। এরইমধ্যে ভয়ঙ্করহারে বাড়ছে ডেঙ্গি। উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ম্যালেরিয়া। সমানতালে বাড়ছে আতঙ্ক।


গতকাল ফের মৃত্যু হয়েছে আরও এক ব্যক্তি। অকালে চলে গেল আরও এক প্রাণ। ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল, দেগঙ্গার বাসিন্দা, বছর ২৫-এর গৃহবধূর। কেন্দ্রের কাছে ডেঙ্গি নিয়ে সঠিক তথ্য পাঠাচ্ছে না রাজ্য, অভিযোগ বিজেপির। ঠিক সময়ে তথ্য দেওয়া হবে, পাল্টা দাবি করেছেন শান্তনু সেন। 


রাজ্যে ভয়ঙ্কর ডেঙ্গি! এবছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬৩ জনের। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। এদিকে, national center for vector borne diseases control programme-এর পরিসংখ্যান বলছে, দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি, ডেঙ্গি আক্রান্ত তেলেঙ্গানায়। এবছর আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৯১৩ জন। আর সব থেকে বেশি মৃত্যু কেরলে। ২০ জনের। সেখানে, পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা দেওয়া হয়েছে, ২৩৯। 

তবে কি এ রাজ্যের পরিসংখ্যান পৌঁছয়নি কেন্দ্রের কাছে? বিজেপির অভিযোগ, কেন্দ্রের কাছে ডেঙ্গি নিয়ে সঠিক তথ্য পাঠাচ্ছে না রাজ্য। শনিবারও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক তরুণী। মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বাসিন্দা, বছর ২৫-এর গৃহবধূর। 


পরিবার সূত্রে খবর, সোমবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন ওই গৃহবধূ। ডেঙ্গি ধরা পড়ায় মঙ্গলবার বারাসাত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার স্থানান্তরিত করা হয় আরজি কর হাসপাতালে। শনিবার রাতে, সেখানেই মৃত্যু হয় তরুণীর। মৃত সোমা দাসের ডেথ সার্টিফিকেটে রয়েছে ডেঙ্গির উল্লেখ। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে শনিবারই নবান্নে সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব।