সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: 'শেখ শাহজাহানকে (Seikh Shahjahan) যদি কেউ গার্ড করে সেটা বিচারব্যবস্থা করছে', এমনই মন্তব্য করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) সোমবার সন্দেশখালি (Sandeshkhali) মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারে কোনও বাধা নেই। শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারে আদালতের কোনও স্থগিতাদেশ নেই, জানালেন প্রধান বিচারপতি।  


পাশাপাশি হাইকোর্টের তরফে এও জানান হয়েছে, সন্দেশখালি মামলায় শেখ শাহজাহানকে যুক্ত করতে হবে। শেখ শাহজাহানকে পার্টি করার বিষয়টি ২টি সংবাদপত্রে নোটিস দিয়ে জানাবে হাইকোর্ট। রাজ্য পুলিশ, সিবিআই, ইডি-কেও মামলায় পার্টি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, 'শেখ শাহজাহানকে এই মামলায় পার্টি করা হোক। কিন্তু কীভাবে করা হবে, তিনি তো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ তো তাঁকে ধরতে পারছে না।'


এদিন আদালতের তরফে এও জানান হয়েছে, চার বছরে ৪৩টি এফআইআর রয়েছে শেখ শাহজাহানের নামে। জমিদখল, ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। ৪২টির চার্জশিট তৈরি হয়েছে। ১টির তদন্ত চলছে। সন্দেশখালিতে হঠাৎ করে কোনও অশান্তি তৈরি হয়নি। সরকার অবগত ছিল বলেই মনে করছে হাইকোর্ট। আলাদা কোনও প্রমাণের দরকার নেই, শাস্তির যে বিধান রয়েছে তা বলবৎ করতে হবে, মত জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। 


রাজ্য পুলিশ, সিবিআই, ইডি-কেও মামলায় পার্টি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 'একজন সাংসদ বলেছেন যে আদালতের নির্দেশের কারণে তাঁকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না', সওয়াল আদালত বান্ধব জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের। 'শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে আদালতের কোন স্থগিতাদেশ নেই। শুধু যে সিট গঠন করা হয়েছিল, তার উপর স্থগিতাদেশ আছে', জানালেন প্রধান বিচারপতি। 


'চার বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছিল, কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরণ ঘটেছে। রাজ্য বলছে দখল করা জমি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার মানে কিছু একটা ঘটেছে, আর কি প্রমাণের দরকার?' সরাসরি সাজা দিতে হবে, কড়া মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। পাশাপাশি ৪২টি মামলার চার্জশিট দিতে ৪ বছর সময় লাগল জেনে আদালত বিস্মিত। পরে আমরা চার্জশিটও খতিয়ে দেখব, মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। 


কী বলেছিলেন অভিষেক? 


শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারি প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'এই নিয়ে কেউ কোনওরকম দ্বিমত, সংশয় রাখবেন না যে শেখ শাহজাহানকে তৃণমূল কংগ্রেস গার্ড করছে। শেখ শাহজাহানকে যদি কেউ গার্ড করে, জুডিশিয়ারি গার্ড করছে। জুডিশিয়ারি স্টে তুলে দিক, তারপর যদি না করতে পারে, তখন আমাকে এসে বলবেন।' 


এরপর তিনি এও বলেন, 'কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ একটি অর্ডার দেয়, যে একটা SIT তৈরি হবে যেখানে রাজ্য প্রশাসন, রাজ্য পুলিশের একজন কর্তা থাকবে, প্রতিনিধি থাকবে, এবং সিবিআইয়ের একজন প্রতিনিধি থাকবে। খুব সম্ভবত ১০-১২ দিন পরে ইডি আপিল করে, মাননীয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আপিল করে তারা স্টে চায়। ইডির আপিল অনুযায়ী, কলকাতা হাইকোর্টের বেঞ্চ সেই স্টে মঞ্জুর করে। স্টে মানে ইনভেস্টিগেশন হবে না। স্টে মানে কাউকে অ্যারেস্ট করা যাবে না। স্টে মানে কাউকে নোটিস পাঠিয়ে ডাকা যাবে না। এটা কে করেছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এটা করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি।'