কলকাতা: তিলজলাকাণ্ডে (Tiljala Child Murder Case) বন্ডেল গেট, পিকনিক গার্ডেনে অশান্তি ছড়ানোর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশকে মারধর, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, রাস্তা অবরোধ-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
তিলজলাকাণ্ডে 'অশান্তি' শহরে
ঘটনায় আর কারা জড়িত, তার খোঁজ পেতে আশেপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে তিলজলা থানার পুলিশ। রবিবার তিলজলার একটি আবাসনে ৭ বছরের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে গতকাল বন্ডেল গেট, পিকনিক গার্ডেন এলাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। র্যাফ নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।
স্যুটকেসে উদ্ধার হয় দেহ
পুলিশ সূত্রে খবর, সকাল ৮টা থেকে নিখোঁজ ছিল ওই নাবালিকা। বেলা ১২টায় থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার, দাবি পুলিশের। তাদের দাবি, সিসিটিভিতে পাশের বাড়িতে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল নাবালিকাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তল্লাশির পরে ওই নাবালিকার খোঁজ পায়নি পুলিশ। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা, এমনও অভিযোগ উঠেছে। পরে পাশের বিল্ডিংয়ের ১টি তালাবন্ধ ফ্ল্যাটে স্যুটকেসের ভিতরে গলা কাটা অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহ।
মাথায় ও কানে আঘাতের চিহ্ন
সিসিটিভিতে পাশের আবাসনে নাবালিকাকে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল বলে সূত্রে খবর। অবশেষে পাশের আবাসনের ৩২টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি করে পুলিশের। তাতেই আবাসনের তিনতলায় অশোক কুমারের ফ্ল্যাট থেকে নিখোঁজ নাবালিকার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। সূত্রের খবর, মাথায় ও কানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ফ্ল্যাটের মালিক বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা অশোক কুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
যৌন নির্যাতন করে খুন এর আগেও
প্রসঙ্গত, যৌন নির্যাতন করে এর আগেও একটি নৃশংস ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল এই শহরকে। জোড়াবাগানকাণ্ডে বিরিয়ানির লোভ দেখিয়ে, প্রথমে যৌন নির্যাতন এবং পরে খুনের সেই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল খাস কলকাতাতেই। তখন একুশ সালের ফেব্রুয়ারি। ৯ বছরের নাবালিকা খুনে শিউরে উঠেছিল গোটা শহর। মৃত্যুর আগে ঠিক কতটা নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল ? ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কার্যতই কেঁপে উঠেছিল গোটা বাংলা।
আরও পড়ুন, আরও পড়ুন, 'শুধু তৃণমূল নয়, বাম আমলেও চিরকুটে চাকরি', বিস্ফোরক দিলীপ
কবুল করেছে অভিযুক্ত
গোটা ঘটনার পর আরও বেশি সতর্ক হয়ে গিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন। যদিও তারপরেও ফের মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি হতে হল ফের কলকাতাকে। গতকাল নাবালিকাকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল তিলজলা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে তিলজলা থানায় ইট ছোঁড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি, বাইক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাল্টা লাঠিচার্জ করে তখন পুলিশ। যদিও ইতিমধ্যেই খুনে অভিযুক্ত ফ্ল্যাট মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে সে। তবে 'যৌন নির্যাতনের পর খুন', কবুল করেছে অভিযুক্ত এমনটাই দাবি পুলিশের।